অর্ণব আইচ: বিদেশ থেকে কলকাতায় মাদক পাচারের পিছনে সেই ‘ডার্ক ওয়েব’। কলকাতায় কোকেন পাচার চক্রের তদন্ত শুরু করে এই বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চিত লালবাজারের গোয়েন্দারা। তাঁদের মতে, আফ্রিকা থেকে দিল্লিতে বিদেশি মাদক নিয়ে আসা হয়েছে ‘ডার্ক ওয়েব’-এর মাধ্যমে। এই পদ্ধতিতে পাচারের পিছনে যে ব্যক্তিটি রয়েছে, সে দিল্লির বাসিন্দা বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। সম্প্রতি বিমানবন্দরের বাইরে ২৫ গ্রাম কোকেন-সহ গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় নাইজেরীয় যুবতী ওকুসান ক্রিস্টিয়ানা। তাকে জেরা করে কলকাতার মাদক চক্রের এজেন্ট তারই পরিচিত নাইজেরীয় দুই ফুটবলার ও নাইট ক্লাবের দুই ডিজে-র খোঁজ মিলেছে। তাদের সন্ধানে চলছে তল্লাশি।
[মঞ্চ থেকে খেলোয়াড়দের উপহার ছুঁড়ে দিয়ে বিতর্কে কর্ণাটকের মন্ত্রী]
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় কোকেন, এলএসডি-র মতো মাদক পাচার করার জন্য এখন পাচারকারীদের বড় ভরসা ‘ডার্ক ওয়েব’। এই সাইটগুলির মাধ্যমেই মাদক পাচার সহজ মনে করে পাচারকারীরা। কারণ এই পদ্ধতিতে ক্রেতা ও বিক্রেতা কেউ কাউকেই চেনে না। শুধু সাইটের পক্ষে ক্রেতাকে কিছু প্রশ্ন করা হয়। ক্রেতার সম্পর্কে কিছু জানারও চেষ্টা হয়। সন্তোষজনক উত্তর পেলেই কেনাবেচা নিয়ে কথা হয়। কী ধরনের মাদক কতটা পরিমাণ ক্রেতা কিনতে চায়, তা জানতে চাওয়া হয়। টাকার লেনদেন হয় ‘বিটকয়েন’-এ। তার জন্য ক্রেতাকে অনলাইনে ‘বিটকয়েন’ কিনতে হয়। প্রাপ্য ‘বিটকয়েন’ হাতে পেলেই বিশেষ কুরিয়র সার্ভিসের মাধ্যমে চলে আসে বিদেশি মাদক।
এর আগেও কলকাতা পুলিশের হাতে ধৃত মাদক পাচার চক্রের তিন মাথা যে ‘ডার্ক ওয়েব’-এর মাধ্যমেই মাদক কিনত, সেই তথ্য পেয়েছিলেন গোয়েন্দারা। কয়েক মাস আগে দক্ষিণ কলকাতা থেকে তিন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছিলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছিল বিদেশি মাদক এলএসডি ও এমডিএমএ। তাদের জেরা করে জানা গিয়েছিল যে, ‘ডার্ক ওয়েব’-এর মাধ্যমে তারা অর্ডার দিয়েছিল এই মাদক। একটি বিশেষ কুরিয়রের মাধ্যমে তাদের হাতে পৌঁছে যেত মাদক। এ ছাড়াও কলকাতায় বিদেশি মাদক পাচারের পিছনে ‘ডার্ক ওয়েব’ থাকার প্রমাণ পেয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা নারকোটিক কন্ট্রোল বু্যরো (এনসিবি)। তাই কোকেন পাচারের ক্ষেত্রেও ‘ডার্ক ওয়েব’ থাকার সম্ভাবনাই বেশি বলে ধারণা লালবাজারের গোয়েন্দাদের। এদিকে, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য মাদক পাচারকারীরা হোয়াটস অ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপ তৈরি করেছিল বলে জেনেছেন গোয়েন্দারা। কী ধরনের মাদক পাচার হবে, তা নিয়ে তারা নিজেদের মধ্যে ‘কোড’-এ কথা বলত। এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে দিল্লিতে এই মাদক চক্রের মাথা এক নাইজেরীয়র সন্ধান চলছে। দিল্লিতে লালবাজারের গোয়েন্দাদের একটি টিম গিয়ে তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
[সুপ্রিম নির্দেশের পরও রাফালের দাম জানাতে নারাজ কেন্দ্র!]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.