ফাইল ফটো
অর্ণব আইচ: লস্কর-ই-তৈবার জঙ্গি ফয়জল হাসান মির্জাকে জেরা করে ডি কোম্পানির সঙ্গে আইএসআইয়ের সম্পর্কের বিষয়ে আরও তথ্য পেলেন গোয়েন্দারা। আইএসআইয়ের মদতেই ফয়জল যে লস্করের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে, সেই বিষয়ে গোয়েন্দারা অনেকটাই নিশ্চিত। এই বিষয়ে মুম্বই পুলিশের পাশাপাশি খোঁজখবর নিচ্ছেন লালবাজারের গোয়েন্দারাও। সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের এসটিএফয়ের তথ্যের সূত্র ধরেই মুম্বইয়ের যোগেশ্বরী থেকে গ্রেপ্তার হয় লস্কর জঙ্গি ফয়জল হাসান মির্জা।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ফয়জলের সূত্র ধরে মধ্যপ্রাচ্য থেকে ধরা পড়েছে ফারুক ডেভাডিওয়ালা। যদিও এই খবরটি গোয়েন্দারা যাচাই করছেন। ফয়জল মির্জার দূর সম্পর্কের আত্মীয় হচ্ছে এই ফারুক। ফারুকের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক ছিল জঙ্গি সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের। এমনকী, তার সঙ্গে আইএসআই ও লস্কর-ই-তৈবার জঙ্গিদের সম্পর্কও ছিল বলে অনেকটাই নিশ্চিত গোয়েন্দারা। সেই সূত্র ধরেই আমির রেজা খানের সঙ্গে ফারুকের যোগাযোগ হয়। পরে ফারুকই ফয়জলের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয় কলকাতায় আমেরিকান সেন্টারে হামলার প্রধান অভিযুক্ত আমির রেজা খানের। তাই ফারুকের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন কলকাতার গোয়েন্দারাও। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ফারুকের মাধ্যমেই ফয়জলের যোগাযোগ হয় ডি কোম্পানির।
দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে ফারুকের ভালই ঘনিষ্ঠতা ছিল। ফারুককে মধ্য প্রাচ্য থেকে ভারতে সোনা পাচারের দায়িত্ব দিয়েছিল দাউদ। আমির ঘনিষ্ঠ ফয়জলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে থাকার সময়ই দাউদ ইব্রাহিম ও ছোটা শাকিলের সঙ্গে পরিচয় হয়। ডি কোম্পানিই ফয়জলকে মধ্য প্রাচ্যে রাখার ব্যবস্থা করে। ফয়জলকে ডি কোম্পানির মাথা ও আমির রেজা খান বলেছিল মধ্য প্রাচ্য থেকে করাচি যেতে। তাকে পাকিস্তানের ভিসা দেওয়া হয়নি। কিন্তু বিমানে করে করাচিতে নামার পর তার কোনও সমস্যা হয়নি। করাচি বিমানবন্দরে তার সঙ্গে এক ব্যক্তি দেখা করে। তাকে বিমানবন্দর থেকে বের করে নিয়ে আসে। গোয়েন্দারা নিশ্চিত যে, ওই ব্যক্তি পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের আধিকারিক। আইএসআইয়ের মদতেই করাচি থেকে ফয়জল মুরিদকে’তে পৌঁছায়।
মুরিদকে’তে লস্কর-ই-তৈবার প্রশিক্ষণ শিবিরে সে বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণ নেয়। একই সঙ্গে আইএসআইয়ের আদলে ছুরি বা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ‘লোন উলফ অ্যাটাক’ করে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের খুনের প্রশিক্ষণও ফয়জলকে দেওয়া হয়। মুরিদকে ছাড়াও করাচির আশপাশে যে ছ’টি জঙ্গি শিবিরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, সেই বিষয়েও গোয়েন্দারা অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছেন। প্রশিক্ষণ চলার সময় ফয়জলের সঙ্গে পরিচয় হয় পাক সেনাবাহিনীর কয়েকজন প্রাক্তন কর্তার। ফয়জলের সঙ্গে কলকাতার যোগ নিয়েও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.