গৌতম ব্রহ্ম: সপ্তাহান্তে বাংলার উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ (Cyclone Remal)। তার ধাক্কা সামলাতে শুক্রবার থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন। কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়ে এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সচিব রাজীব গৌবা পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। সেইসঙ্গে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের তরফে সতর্কতামূলক নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে দুই রাজ্যে। তার আগে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে নবান্নে বিশেষ কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব নিয়েছে IAS-রা।
বৃহস্পতিবারই WBCS আধিকারিকদের নিয়ে বিশেষ কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। জেলায় জেলায় কন্ট্রোল রুম চালু করেছেন জেলাশাসকরা (DM)। রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে বাংলাদেশগামী (Bangladesh) ওয়েল ট্যাংকারের যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছে। সকাল থেকে শুরু হয়েছে মাইকিং। মাঝ সমুদ্র থেকে মৎস্যজীবীদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। পর্যটকদেরও শনিবার সকাল থেকে এলাকা খালি করতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, রবিবার মধ্যরাতে ল্যান্ডফল করবে ‘রেমাল’। নবান্নে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের (Disaster Management) ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুমে এখন থেকেই তুমুল সতর্কতা। ঝড়বৃষ্টিতে সাধারণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হলে হট লাইনের মাধ্যমে যাতে যোগাযোগ রাখা যায় তার ব্যবস্থাও করে হয়েছে।
বিদ্যুৎ, পূর্ত, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, পরিবহণ, শিক্ষা, কৃষি-সহ বিভিন্ন দপ্তরকে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর। রাস্তাঘাট, জেটি, বন্দরের কোনও ক্ষতি হলে যাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতি শুরু করতে বলা হয়েছে। কর্মীদের ছুটি বাতিল করল কলকাতা পুরসভা (KMC)। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের সচিব ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আসলে শনিবার রাজ্যের ষষ্ঠ দফার লোকসভা নির্বাচন (2024 Lok Sabha Election)। পূর্ব মেদিনীপুরের মতো উপকূলবর্তী জেলায় ভোটগ্রহণ।
নবান্নের এক আধিকারিক জানালেন, রবিবার রাতে যেহেতু ল্যান্ডফল তাই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ভোট মিটলেই ঝড়বৃষ্টি হওয়ায় কথা। তবু সাবধানের মার নেই। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের আশপাশে শক্ত ছাউনির ব্যবস্থা করা হয়। যাতে বিপর্যয়ের সময় এগিয়ে এলে ভোটাররা যাতে সেখানে বৃষ্টির সময় আশ্রয় নিতে পারেন। শিক্ষাদপ্তরকে উপকূলবর্তী কিছু স্কুলকে ফাঁকা রাখতে বলা গিয়েছে। যাতে প্রয়োজনে সেসব স্কুলগুলি শেল্টার হিসাবে ব্যবহার করা যায়। নিচু এলাকায় লোকজনদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে আসার কাজ শুরু হয়েছে। হাসপাতালের নিচতলা থেকে রোগীদের প্রয়োজনে উপরের স্থানান্তরিত করার কথা বলা হয়েছে। সেনা, নৌসেনা ও বায়ুসেনার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছে রাজ্য সরকার। প্রয়োজনে যাতে সাহায্য নেওয়া যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.