সুলয়া সিংহ: ভাড়ায় আজকাল কী না হয়? একদিনের জন্য কিছু একটা অপ্রয়োজনীয় জিনিস দরকার৷ কিনবেন কি না ভাবতে ভাবতেই মুশকিল আসান৷ শোনা গেল, একদিনের জন্য সেটা ভাড়াই করতে পারেন৷ ব্যাস, কেনাকাটার ঝক্কি আর রইল না৷ সমস্যার চটজলদি সমাধানে ভাড়ার জুড়ি নেই৷
কিন্তু তা’বলে জামাই? জামাইষষ্ঠীর আগে তাও ভাড়ায় পাওয়া যায়! শুনে চমকে গেলেও, এটাই সত্যি৷ অন্তত দক্ষিণ কলকাতার এক জমজমাট এলাকার দেওয়াল লিখনে সেকথাই স্পষ্ট৷ মহানায়ক উত্তমকুমার মেট্রো স্টেশন থেকে যাদবপুর এইট-বি যাওয়ার অটোস্ট্যান্ডের কাছে একটি প্রাচীর ঘেরা এলাকা৷ ইটের গাঁথুনির ফাঁকে আচমকাই চোখ টেনে নিল একটি লেখা৷ চক দিয়ে বড় বড় করে বাংলায় লেখা, এখানে জামাই ভাড়া পাওয়া যায়৷ এরপর ব্র্যাকেটে লেখা, ডিলার আছে৷ তবে কোনও নাম বা যোগাযোগের কোনও নম্বর বা ঠিকানা লেখা নেই৷ কিন্তু এই কয়েকটা শব্দই চোখ টানতে বাধ্য করে৷ বিশেষত জামাইষষ্ঠীর আগে৷ আশেপাশের মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ওই দেওয়ালে আগে এমন কোনও বিজ্ঞাপনী লেখা ছিল না৷ রাতারাতিই কেউ বা কারা এরকম একটি লেখা খোদাই করেছে৷
এখন প্রশ্ন হল, কারা এমন করল? করলই যদি তাহলে কোনও যোগাযোগের নম্বর নেই কেন? নাকি নিছকই মজা করার জন্য দেওয়ালে এমন একটি চমকপ্রদ লেখা? এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সহজ নয়৷ কিন্তু এর নেপথ্যে যে সামাজিক, মনস্তাত্বিক বিষয়টি কাজ করছে, তা ভাবার মতো৷ আজকের জেটযুগে বাঙালির প্রথা-পার্বণ পালনে অনেকটাই কাটছাঁট হয়েছে৷ সবসময় উপযুক্ত উপলক্ষও মেলে না৷ হয়তো জামাইষষ্ঠী বিষয়টি কারও কারও উদযাপন করার সুযোগ থাকে না নানা কারণে৷ অথচ আশেপাশের আচার-অনুষ্ঠান দেখে সুপ্ত বাসনাও থেকে যায় এমন একটি উৎসব পালনের৷ তবে কি তাদের সেই আবেগ উসকে দিতেই জনৈক অজ্ঞাতপরিচয়ের এমন একটি বিজ্ঞাপন? যেখানে স্পষ্ট ইঙ্গিত, বাস্তবে জামাই না থাকলেও, জামাইষষ্ঠী থেকে বঞ্চিত হওয়ার কিছু নেই৷ কারণ, ‘এখানে জামাই ভাড়া পাওয়া যায়৷’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.