ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যেন আর পাঁচটা সাধারণ দিন, নির্ভেজাল ছুটির সপ্তাহান্ত। দেশজুড়ডে লকডাউনের চতুর্থ দিন সকালে কলকাতার বিভিন্ন রাস্তার ছবি তেমনটাই। রাস্তার দু’ধারে জমিয়ে বসেছে বাজার – ফুল, ফল, সবজি থেকে শুরু করে মাছ-মাংস কিছু বাদ নেই। চার, পাঁচদিনের খরা কাটিয়ে সপ্তাহান্তের সকালে দু, একটা চায়ের দোকানও খুলে বসেছে। যদি নিত্যদিনের ক্রেতাদের দেখা পাওয়া যায়, এই আশায় হয়ত বা। লকডাউনের দিনেও এভাবে দোকান, বাজার খুলে বসলে ক্রেতাদের অভাব হয় না। হলোও না। উত্তর কলকাতার বাগমারি বাজার তাই এই দিনেই ভিড়ে ঠাসা। ন্যূনতম দূরত্বও বজায় রাখেননি কেউ।
ঘড়ির কাঁটা সাড়ে সাতটার দিকে এগোচ্ছে। অন্য দিন হলে, এই সময়ে ঘুম ভেঙে আরও অন্তত আধঘণ্টা পর গৃহকর্তারা বাজারের থলি হাতে বেরন। কিন্তু এখন লকডাউন। আইনমতো কোনও সময়েই বেরনোর কথা নয়। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া। তবে লকডাউনের প্রথম সপ্তাহান্তে চিত্রটা একেবারে অন্য। সকালেই বাজারে ভিড় জমিয়েছেন মানুষজন। দেখে মনে হবে বুঝি আজ থেকেই লকডাউন উঠে গেল। আর পাঁচটা দিনের মতোই একটা সকাল। করোনা আতঙ্ক মোটেই কলকাতাবাসীর একটা বড় অংশকেই টানা ঘরবন্দি রাখতে পারেনি। সংক্রমণের আশঙ্কা তুড়ি মেরে উড়িয়ে সকাল সকাল তাঁরা হাজির মাছ-মাংসের দোকানে। কেউ বা চেনা চায়ের ঠেকে।
সবজি হোক বা ফল কিংবা ফুল, দোকানির সঙ্গে ক্রেতার কিংবা ক্রেতাদের নিজেদের মধ্যে ন্যূনতম দূরত্ব নেই। বিকিকিনিতেই মন সবার। কারও মুখে মাস্ক আছে, তো বেশিরভাগেরই নেই। মাংসের দোকানের সামনে লম্বা লাইনে একে অপরের গা ঘেঁষেই দাঁড়িয়ে। কোনওরকম ভয়ডর নেই। কেন এত ভিড়ের মাঝে বাজারে এসেছেন? এই প্রশ্ন করতে জানা গেল, বাগমারি এলাকার এই বাজারটি সবচেয়ে বড়। সারা সপ্তাহের রসদ মিলবে সহজেই। একইসঙ্গে বাজার আবার ১১টায় বন্ধ হয়ে যায়। তাই তাড়াহুড়ো করেই বাজার করতে হচ্ছে, জানালেন জনৈক ক্রেতা।
হয়ত যুক্তিগ্রাহ্য কারণই দর্শাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি? যেখানে মুখ্যমন্ত্রী নিজে পথে নেমে, বাজার ঘুরে, গণ্ডি কেটে হাতে ধরে শিখিয়ে দিচ্ছেন সোশ্যাল ডিসট্যান্স বা সামাজিক দূরত্বের বাস্তব হিসেব, সেখানে কেন এই ছবি? কেন সামান্য একটু দূরে দাঁড়াচ্ছেন না কেউ? এসব প্রশ্নের উত্তর অবশ্য মেলেনি। বোঝাই যাচ্ছে, লকডাউন করে অনেককেই ঘরে আটকে রাখা যাচ্ছে না, যাবেও না। এরই উলটো ছবি, দেশজুড়ে ইতিমধ্যেই প্রায় চক্রবৃদ্ধি হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ঘণ্টায় ঘণ্টায় পরিসংখ্যানও কি এঁদের সতর্ক করতে পারছে না? প্রশ্নটা রয়েই যাচ্ছে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.