ফাইল ছবি
অভিরূপ দাস: বাথরুমের ছাদ থেকে সিমেন্টের চাঙড় ঝরছে। প্রাণ হাতে করেই করিডর দিয়ে হাঁটছেন রোগীরা। এমনই অবস্থা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শতাব্দীপ্রাচীন বিল্ডিংয়ের। মাঝখানে থেকে হাঁ হয়ে গিয়েছে এমসিএইচ ভবন। ধরা পড়েছিল মাস সাতেক আগে। সে সময় কোনওরকমে চুনকাম করে ঢাকা দেওয়া গিয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে ফের চওড়া ফাটল দেখা দিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শতাব্দীপ্রাচীন এমসিএইচ বিল্ডিংয়ে। প্রায় তিনশো রোগী ভর্তি থাকেন এই বিল্ডিংয়ে। এখানে রয়েছে আইসিসিইউ, এইচডিইউ, হেমাটোলজি, কার্ডিওলজি, মেডিসিন, পেডিয়াট্রিক এইচআইভি সেন্টার। প্রতিদিনই আসেন কয়েকশো রোগী। কিন্তু ভগ্নপ্রায় বিল্ডিংয়ে ভয়ে কাঁপছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন : ১০৫ দিন পর স্বস্তি, আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় জামিন চিদম্বরমের ]
কেন এত বড় ফাটল? এমসিএইচ বিল্ডিংয়ের পাশেই ক্যানসার রোগীদের জন্য তৈরি হচ্ছে দশতলা ভবন। সেই ভবনের দু’টি তল থাকবে মাটির নিচে। সেই কারণেই প্রায় চল্লিশ ফুট গভীর একটি গর্ত খোঁড়া হয়েছে। পোঁতা হয়েছে সত্তরটি স্তম্ভ। সেই পাইলিংয়ের কাজের জন্যই বিস্তর খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়েছে।সেই কাজের সময় ব্যাপক কম্পনেই এই ফাটল দেখা দিয়েছে বলে মনে করছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন : টাকা নেই, মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদের দৌড়ে ইতি টানলেন কমলা হ্যারিস]
এমসিএইচ বিল্ডিংয়ের বাইরের যা অবস্থা তার থেকে ভিতরের অবস্থা আরও খারাপ বলেই জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। হাসপাতালের কর্মচারীরা জানিয়েছেন, ফাটলের চোটে ভবন ক্রমশ মাঝখান থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছে। বড় বড় লোহার খুঁটি দিয়ে সাপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। আশঙ্কায় রয়েছেন রোগীরা। ইতিমধ্যেই ফাটল সাড়াতে পিডব্লুডির কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
[আরও পড়ুন :১৭ হাজার কোটি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে ৫১ প্রতারক]
মঙ্গলবার ব্যক্তিগত কাজে হাসপাতালে ছিলেন না সুপার। প্রিন্সিপাল মঞ্জুশ্রী রায়কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি ফাটল সম্বন্ধে কোনও কিছু বলতে অস্বীকার করেন। তবে হাসপাতালের আধিকারিকরা মনে করছেন, নতুন বিল্ডিংয়ে তৈরি করার জন্য যে গর্ত খোঁড়া হয়েছে তাই রয়েছে এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে। খরচ বাঁচাতে নিয়ম মেনে সেই গর্ত খোঁড়া হয়নি। সাধারণত এসব কাজ হলে পাশের বিল্ডিংয়ের বাইরে লোহার বার পুঁতে খাঁচা তৈরি করে গার্ড দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে সেসব কিছুই করেনি পিডব্লুডি। সাত মাস আগে প্রথম ফাটল দেখা গিয়েছিল। সেসময় বিল্ডিং নিরাপদ কি না তা জানতে চেয়ে পিডব্লুডি-কে চিঠি দিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, পিডব্লুডি-র তরফে তখন জানানো হয়েছিল তেমন চিন্তার কোনও কারণ নেই। এদিকে নতুন করে ফাটল বড় করে দেখা যাওয়ায় কপালে ভাঁজ রোগী এবং রোগীর পরিবারের। সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, “রোগীদের নিরাপত্তাই প্রধান বিষয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.