ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: কেন্দ্রের অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটকে একযোগে ‘ভোটের প্রচার’ বলে কটাক্ষ করল সিপিএম-কংগ্রেস। পালটা জবাবে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব বিরোধীদের সমালোচনায় এই বাজেটকে ‘ভবিষ্যতের দিশারি’ বলে উল্লেখ্য করেছেন। বস্তুত, ভোটের আগে অন্তবর্তীকালীন বাজেটকে কেন্দ্র করে আবারও কাছাকাছি এল কংগ্রেস-সিপিএম।
শুক্রবার কেন্দ্রের অন্তর্বর্তী বাজেটকে ‘নির্বাচনী ইস্তেহার’ বলে কটাক্ষ করেছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। একই বক্তব্য কংগ্রেসেরও। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রর বক্তব্য,“ভোট পাওয়ার লক্ষ্যেই এমন বাজেট পেশ করেছে কেন্দ্র। মধ্যবিত্তকে কিছুটা আর্থিক সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হলেও, কোথা থেকে সেই অর্থ সংস্থান হবে, তার কোনও উল্লেখ নেই বাজেটে।” সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের দাবি,“এমন কিছু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে এই অন্তর্বর্তী বাজেটে যা বাস্তবায়িত করা এক কথায় অসম্ভব। কারণ অর্থ সংস্থানের কোনও ব্যবস্থা দেখানো নেই এই বাজেটে।” উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেছেন, “গত আর্থিক বছরের তুলনায় রাজস্ব বৃদ্ধির হার সাত শতাংশ বেশি দেখানো হয়েছে। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা। অথচ অনুমান করা হয়েছে রাজস্ব বৃদ্ধি হবে প্রায় ১৭ শতাংশ, বা ৫০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এই টাকা কোথা থেকে আসবে, তার স্পষ্ট উল্লেখ্য নেই অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটে।” তবে মধ্যবিত্তদের আয়কর ছাড় দেওয়া হয়েছে মেনে নিয়েও দুই বিরোধী দলই বলেছে, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কোনও ব্যবস্থা নেই এই বাজেটে। সূর্যকান্ত মিশ্র এদিন আরও একধাপ এগিয়ে বলেছেন, “এই বাজেটের ফলে রাজ্যগুলির অর্থ সংস্থানে চাপ বাড়বে। জিএসটি বাবদ রাজ্যগুলির প্রায় ৬১ হাজার কোটি টাকা কম আয় হবে”। একশো দিনের কাজ সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত বলে অভিযোগ করে আলিমুদ্দিনের মন্তব্য, এর ফলে গ্রামের মানুষের আয় কমবে।
[‘মেয়াদ উত্তীর্ণ’ দেখনদারির বাজেট, কড়া সমালোচনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়]
কংগ্রেস-সিপিএম অন্তর্বর্তী বাজেটের সমালোচনা করলেও রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বাজেটকে ‘উন্নয়নের দিশারি’ বলেছেন। তাঁর কথায়,“শুরু থেকে বিরোধীরা চুপ ছিল, কারণ তাঁরা বুঝতে পেরেছেন সমালোচনার কোনও জায়গা নেই। বিরোধী দলগুলি ভোটমুখী বাজেট বলে কটাক্ষ করলেও দিলীপ ঘোষের কথায়,“ভবিষ্যৎকে কেন্দ্র করেই এই বাজেট। তবে সিস্টেম বদলাতে সময় লাগবে।” বিরোধীদের পাশাপাশি আইএমএ-র সর্বভারতীয় সভাপতি ও তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন এই বাজটকে অন্তঃসারশূন্য বাজেট হিসাবে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ২০৩০ সালের মধ্যে সুস্থ ভারত গড়ার ডাক দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু ৫০ কোটির বাজেটকে এই প্রকল্পে আনতে গেলে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করার কথা তা কোথায়? তিনি বলেন,“হেলথ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে এইমস পরিদর্শনের সুযোগ হয়। এমডি (ফরেনসিক) পড়ানো হয় ভুবনেশ্বর এইমসে। অথচ শব ব্যবচ্ছেদের ব্যবস্থা নেই। স্বশাসিত হওয়ার সুবিধা নিয়ে দুর্নীতির চাষ হচ্ছে অনেক এইমসে।” তাঁর অভিযোগ, ১ কোটি টাকার জিনিস ১০ কোটি টাকায় কেনা হচ্ছে। কোথাও কোনও শৃঙ্খলা নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.