রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: এবার সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে নবীন ও প্রবীণ সমন্বয় রেখেই এগোতে চায় আলিমুদ্দিন। গত রাজ্য সম্মেলনে পক্ককেশ কমরেডদের বড় অংশকে বাদ দিয়ে একঝাঁক তরুণ মুখ নিয়ে আসা হয়ে ছিল। এবার সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি হুগলির ডানকুনিতে। চলবে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবার রাজ্য কমিটিতে তরুণ ও প্রবীণ সমন্বয় রেখেই নতুন কমিটি করা হবে। দলে তরুণ প্রজন্মের পাশাপাশি প্রবীণদের অভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগানো দরকার পার্টির দুর্দিনে। এমনটাই মনে করছে আলিমুদ্দিন।
পাশাপাশি সিপিএম সূত্রে খবর, গতবার রাজ্য কমিটিতে জায়গা করে নেওয়া এই মুহূর্তে পার্টি কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে দলে আরও গুরুত্ব দেওয়ার দাবি উঠেছে। পার্টির একাংশের দাবি, দলে তরুণ প্রজন্মের মুখ মীনাক্ষীকে এবার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে জায়গা দেওয়া হোক। সেটা নিয়ে পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব ভাবনাচিন্তা করছে বলেই জানা গিয়েছে।
গত রাজ্য সম্মেলনে বঙ্গ সিপিএমের ব্যাটন গিয়েছিল মহম্মদ সেলিমের হাতে। এক ঝাঁক নতুন ও তরুণ মুখকে তুলে আনা হয়েছিল রাজ্য কমিটিতে। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, ময়ুখ বিশ্বাস, শতরূপ ঘোষরা জায়গা পেয়েছিলেন রাজ্য কমিটিতে। পাশাপাশি রাজ্য কমিটিতে একেবারে তরুণ মুখেদের মধ্যে রয়েছেন সায়নদীপ মিত্র, মধুজা সেন রায়, সৃজন ভট্টাচার্য, প্রতীক উর রহমান, শেখ ইব্রাহিম, ধ্রুবজ্যোতি সাহা প্রমুখ।
এবার একেবারে তরুণ মুখ বিশাল সংখ্যায় নতুন করে কাউকে তুলে আনার সম্ভাবনা প্রায় নেই। একেবারে সিনিয়র কয়েকজন বাদ পড়তে চলেছেন। বয়সের কারণে এবার সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাংলার কয়েকজন বাদ পড়তে পারেন। সেই শূন্য জায়গায় একেবারে তরুণ মুখ মীনাক্ষীকে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে রাজ্য সিপিএমের একাংশ। পার্টির অন্য অংশের বক্তব্য, মীনাক্ষীর বয়স এখন কম। ফলে কেন্দ্রীয় কমিটিতে যাওয়ার অনেক সময় আছে। এপ্রিলে তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস। রাজ্য সম্মেলনের পর মীনাক্ষীর বিষয়ে ভাবা হবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে কি না। তবে এবার দীপ্সিতা ধরকে সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য করতে পারে। রাজ্য কমিটিতে নিয়ে আসা হতে পারে পার্টির যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিমগ্নরাজ ভট্টাচার্য, রাজ্য যুব নেতা কলতান দাশগুপ্তকে।
দীপ্সিতা অবশ্য দিল্লির পার্টি সদস্য। তাঁকে পার্টি মেম্বারশিপ দিল্লি থেকে পশ্চিমবঙ্গে ট্রান্সফার করে এখানে রাজ্য কমিটিতে নিয়ে আসার কথাও উঠেছে। কলতানকে রাজ্য কমিটিতে নিয়ে আসা হলে বা নাও যদি নেওয়া হয়, দু ক্ষেত্রেই তাঁকে নিয়ে হওয়া আর জি কর বিতর্ক সামাল আসবে। আর এসএফআইয়ের বর্তমান রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে-কে রাজ্য কমিটিতে নিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে খবর।
নবীন ও প্রবীণ সমন্বয় রেখে এবার রাজ্য কমিটি গঠনের যে কথা ভাবা হচ্ছে তার নির্দিষ্ট কারণও রয়েছে। ‘বৃদ্ধতন্ত্র’ হঠিয়ে এরিয়া থেকে জেলা এবং রাজ্য কমিটিতেও তরুণ সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল। তরুণ মুখ এনে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টাও করছে বঙ্গ সিপিএম। কিন্তু
তারপরও পার্টির রোগমুক্তি হচ্ছে না। ফিরছে না হারিয়ে যাওয়া ভোটও। তরুণ প্রজন্মকে তুলে আনতে গিয়ে অনভিজ্ঞতা কি ‘বোঝা’ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সেই আশঙ্কাও রয়েছে পার্টিতে। কারণ, সিপিএমের তরুণ প্রজন্মের বড় অংশই শুধুমাত্র ফেসবুকে ‘বিপ্লবী’ হয়ে ওঠে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.