সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য শাস্তি পেলেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁকে আগামী তিন মাসের জন্য দল থেকে ‘সাসপেন্ড’ করা হয়েছে। রাজ্য কমিটির বৈঠকে একথা জানিয়েছেন দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন মহম্মদ সেলিম, মৃদুল দে ও মদন ঘোষ। আগামী ২ আগস্টের মধ্যে ওই কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে। যতদিন না ওই কমিটি রিপোর্ট জমা দেয়, ততদিন পর্যন্ত ‘সাসপেন্ড’ থাকবেন অভিযুক্ত সিপিএম সাংসদ।
সূত্রের খবর, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে আলোচিত হয় যে ঋতব্রত যে কাজ করেছেন, তা পার্টি লাইনের বাইরে৷ তাঁর আচরণকে পার্টি কোনওভাবেই সমর্থন করে না৷ কেন তিনি ওই ধরনের কাজ করেছেন, তার জবাব তাঁকে দিতে হবে৷ ঋতব্রতর বিলাসবহুল জীবনযাপন ও বেশ কিছু দলবিরোধী কাজকর্ম নিয়ে ইদানীংকালে জেলাগুলি থেকেও একাধিক অভিযোগ এসেছে৷ ঋতব্রতর ব্যবহার নিয়েও আলিমুদ্দিনে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে৷
CPM suspends Rajya Sabha MP Ritabrata Banerjee from the party for three months after complaints over his lifestyle pic.twitter.com/iHq1fgQvBH
— ANI (@ANI_news) June 2, 2017
মূল বিতর্কের সূত্রপাত শিলিগুড়িতে ডার্বি ম্যাচের দিন৷ সেদিন কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে খেলা দেখতে গিয়েছিলেন ঋতব্রত৷ খেলা চলাকালীন ঋতব্রতর একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন পার্টিরই এক সদস্য৷ ছবিতে দেখা যায়, ঋতব্রতর হাতে ও পকেটে বহুমূল্যের বিদেশি ঘড়ি ও পেন শোভা পাচ্ছে৷ একজন বামপন্থী ছাত্রনেতার এই ধরনের ঘড়ি ও পেন ব্যবহার করা উচিত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পার্টির ওই সদস্য৷ অভিযোগ, এরপরই ওই পার্টি সদস্যের অফিসে একটি মেল পাঠিয়ে তাঁর চাকরি কেড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন ঋতব্রত৷ আর এটা নিয়েই বিতর্ক চরম আকার নেয়৷ সিপিএম সাংসদের এই আচরণে সোশ্যাল মিডিয়ায় ওঠে প্রশ্নের ঝড়৷ বিতর্ক তুমুল আকার নিতেই নড়েচড়ে বসে সিপিএম পার্টি৷ বিবৃতি দিয়ে দল জানিয়ে দেয়, ঋতব্রতর এই কার্যকলাপ পার্টি অনুমোদন করে না৷
যাদবপুরের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র ফেসবুকে একটি কার্টুন পোস্ট করে যখন গ্রেফতার হন, তখন মুক্তচিন্তার পক্ষে সওয়াল করেছিল সিপিএম৷ সরকারকে ‘অসহিষ্ণু’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন৷ হায়দরাবাদের দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার ঘটনাতেও মুক্তভাবনার কথা শুনিয়েছিলেন স্বয়ং ঋতব্রতই৷ প্রশ্ন উঠেছে, নিজের বেলায় কেন সমালোচনা সহ্য করতে পারছেন না ঋতব্রত৷? কেন এই অসহিষ্ণুতা? কেন এই দ্বিচারিতা৷ কেন নিছক একটি পোস্টের জন্য একজনের চাকরি খেয়ে নেওয়ার উপক্রম করা হচ্ছে?
জানা গিয়েছে, যে ব্যক্তি ফেসবুকে এই মন্তব্য করেছিলেন ওই ব্যক্তির অফিসের এইচআর বিভাগের এক আধিকারিককে মেল করেন ঋতব্রত৷ মেলে তিনি এবিষয়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগও জানান৷ সেই মেলের স্ক্রিনশটও ছড়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ অভিযোগ, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করায় দিল্লির সংশ্লিষ্ট থানায় ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোরও হুঁশিয়ারি দেন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.