Advertisement
Advertisement
CPM

লাগাতার ভোট বিপর্যয়, পথ খুঁজতে আমজনতার দুয়ারে সিপিএম, সোশাল মিডিয়ায় চাওয়া হল পরামর্শ

নিচুতলার সংগঠন সামলানো ও বুথ আগলানোর লোক যে সেরকম ছিল না সেটা ইতিমধ্যেই পর্যালোচনা রিপোর্টে মেনে নিয়েছে সিপিএম।

CPM seeks public advice in social media after massive loss in Lok Sabha election
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:July 3, 2024 9:26 pm
  • Updated:July 3, 2024 9:26 pm

রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: একের পর এক নির্বাচনে বিপর্যয় চলছেই। ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না লালঝান্ডা। তাই এবার পার্টির নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে গিয়ে আমজনতার পরামর্শ চাইল সিপিএম (CPIM)। পার্টির ভালো কীভাবে হবে, ভালো ফল করতে গেলে কী করা উচিত, যা এতদিন স্বাভাবিকভাবেই দলের জেলা থেকে রাজ‌্য নেতারাই মতামত দিয়েছেন। কিন্তু পার্টি রাজ্যের ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর ব‌্যর্থতার পাশাপাশি জনগণের মন পেতেও বারেবারে ব‌্যর্থ হচ্ছে বঙ্গ সিপিএম। ভোট কমতে কমতে মাত্র ৬ শতাংশে এসে ঠেকেছে। তাই দলের আভ‌্যন্তরীণ বৈঠকে পার্টির ভুলত্রুটি, রোগ মুক্তির দাওয়াই খুঁজে বের করার চেষ্টা তো হবেই, কিন্তু তার পাশাপাশি এবার আমজনতার পরামর্শ চাইছে সিপিএম। যা পার্টিতে কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

সোশ‌্যাল মিডিয়ায় এই পরামর্শ আপাতত চাওয়া হয়েছে। রাজ‌্য সিপিএমের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশে আবেদন করা হয়েছে, ‘নির্বাচনী পর্য়ালোচনায় আপনাদের সকলের মতামতের প্রত‌্যাশী আমরা। ই-মেল মারফৎ আপনার কথা সরাসরি জানান পার্টিকে।’ ই-মেল আইডিও পোস্টের তলায় উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। লোকসভায় খারাপ ফলের জন‌্য অন‌্যতম কারণ হচ্ছে দুর্বল সংগঠন ও মানুষের মন না পাওয়া। অর্থাৎ, সোশ‌্যাল মিডিয়ায় কিংবা সভা-সমাবেশে লোক এলেও নিচুতলার সংগঠন সামলানো ও বুথ আগলানোর লোক যে সেরকম ছিল না সেটা ইতিমধ্যেই পর্যালোচনা রিপোর্টে মেনে নিয়েছে সিপিএম।

Advertisement

আম জনতার পরামর্শ চেয়ে পার্টির ফেসবুক পেজে এই পোস্ট করার পরই, সেই পোস্টের প্রেক্ষিতে একাধিক কমেন্টেও বিদ্ধ হতে হয়েছে রাজ‌্য সিপিএম (CPIM) নেতাদের। জনৈক পার্টি সমর্থক মন্তব‌্য করে প্রশ্ন করেছেন, কমিউনিস্ট পার্টিটা কি শহরের মধ‌্যবিত্তদের পার্টি? গ্রামের প্রান্তিক মানুষ, গরিব, কৃষক, খেতমজুর, তাদের মতামত কীভাবে পাওয়া যাবে? তারা কি ই-মেলের ব‌্যবহার জানে? আরেকজন মন্তব‌্য করেছেন, দুর্বল সংগঠন, সিপিএমের কোনও অস্ত্বিত্ব নেই পথেঘাটে। মানুষের সঙ্গে সংযোগ করতে পারছে না দল। মানুষের ভাষায় কথা বলতে হবে। তাদের কথা শুনতে হবে। একইভাবে সমর্থকরা এমন মন্তব‌্যও করেছেন যে, সিপিএমকে একা লড়াই করতে হবে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: মানিকতলায় তৃণমূল প্রার্থী সুপ্তি পাণ্ডের হয়ে প্রচারে নুসরত জাহান!]

প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha 2019) বামফ্রন্ট ৪০টি আসনে প্রতিদ্বন্দিতা করে পেয়েছিল ৭.৪৪ শতাংশ ভোট। আর ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে ৩০টি আসনে প্রতিদ্বন্দিতা করে বামফ্রন্ট পেয়েছে ৬.৩৩ শতাংশ ভোট। সিপিএমের প্রাপ্ত ভোট ৫.৬৮ শতাংশ। কাজেই কংগ্রেসের ‘হাত’ ধরেও লাভ কিছু হয়নি আলিমুদ্দিনের। এটা পরীক্ষিত সত্য বলেই মনে করছে দলের একাংশ। আবার নতুন প্রজন্মকে সামনের সারিতে এনেও ব‌্যর্থ হয়েছে পার্টি। নতুন মুখেরাও গো-হারান হেরেছে। ঘুরে দাঁড়াতে সিপিএমের এবার আমজনতার পরামর্শ চাওয়াকে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

[আরও পড়ুন: হেমন্তের জন্য কুরসি ছেড়ে ইস্তফা চম্পাইয়ের, সরকার গঠনের দাবি শিবুপুত্রের]

প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষের বক্তব‌্য, ‘‘সেই ২০০৮ সাল থেকে শুনছি ঘুরে দাঁড়ানোর জন‌্য বিশ্লেষণ হবে, ফর্মূলা খুঁজবে। নিচুতলার বুথ রিপোর্ট খতিয়ে দেখবে। ১৬ বছর ধরে একই কথা বলছে সিপিএম। কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানো নয়, শূন্যেই থেকে যাচ্ছে তারা। আসলে মানুষের সঙ্গে মাটির সঙ্গে যোগাযোগ নেই ওদের।’’ দলের নতুন প্রজন্মকে নিয়ে কুণাল বলেন, ‘‘নতুন প্রজন্মের যারা আছে তারা সোশ‌্যাল মিডিয়ায় বিপ্লব করে। টিভিতে টক-শোয়ে চোখা চোখা ডায়লগ লিখে নিয়ে যায়। সেটা আবার ইউটিউবে দিয়ে পয়সা রোজগার করে। তাই মানুষ সিপিএমকে বর্জন করেছে।’’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ