অভিরূপ দাস: করোনা আবহে সংক্রমণের ভয়ে কার্যত বন্ধ দেহদান। কিন্তু তারই মধ্যে দেহদান করে সিপিআইএম নেত্রীর শেষ ইচ্ছা পূরণ করল তাঁর পরিবার। প্রয়াত নেত্রী সীমা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন করোনার গবেষণায় যেন কাজে লাগে তাঁর দেহ।
বছর ষাটের সীমা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত (Corona Positive) হয়েছিলেন। পরে অবশ্য রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। অর্থাৎ মারণ ভাইরাসকে হারিয়ে সুস্থই হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু শরীরে কোভিড পরবর্তী সমস্যা দেখা দেয়। যে কারণে তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। শুক্রবার সকাল ৬টা নাগাদ ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে প্রাণ হারান সিপিআইএমের জেলা কমিটির সদস্যা সীমাদেবী। তারপরই তাঁর ছেলে দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুত্রবধূ রীতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁদের মায়ের শেষ ইচ্ছা ছিল দেহদান। কারণ তিনি চেয়েছিলেন, কোভিডে শরীরের ঠিক কী ক্ষতি হচ্ছে, কেন করোনা থেকে সেরে উঠেও অনেকেই প্রাণ হারাচ্ছেন, তা গবেষণা করে দেখা হোক। এতে যদি পরবর্তীতে মানুষের প্রাণ বাঁচানো যায়, তাহলেই তাঁর দেহদান সার্থক হবে।
ভোল বদলে আরও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে করোনা। দ্বিতীয় ঢেউয়ে রীতিমতো বিধ্বস্ত দেশ। অনেকেই কোভিডমুক্ত হওয়ার পরও বেশ কিছু শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। হার্টের সমস্যা থেকে রক্ত জমাট বাঁধা, নানা কারণ ডেকে আনছে মৃত্যুও। কেন এমনটা হচ্ছে? কেন করোনা মুক্তির পরও শরীরে তার তীব্র প্রভাব থেকে যাচ্ছে। কেন হার্টের রোগ দেখা দিচ্ছে? সাইটোকাইন স্টর্মের কারণ কী? এই বিষয়গুলিই যেন কাঁটাছেড়া করে দেখেন চিকিৎসকরা। এমন ইচ্ছের কথাই জানিয়ে গিয়েছিলেন সীমাদেবী। বলেছিলেন, “চিকিৎসা বিজ্ঞানে যেন কিছু অবদান রেখে যেতে পারি।”
অতিমারী আবহে তাই করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেও প্রাণ হারানো নেত্রীর দেহদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে। কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে প্যাথলজিক্যাল অটোপসি করা হবে হাওড়ার প্রয়াত সীমাদেবীর। তাঁর এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে দৃষ্টান্ত হয়ে রইল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.