স্টাফ রিপোর্টার: নিউটাউনে জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রের ভবনের প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বাংলাদেশের সঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরি বন্যা! তাঁকে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোয় সিপিএমের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মহলে নিন্দার ঝড়। ১৭ জানুয়ারি ওই অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করারও কথা রেজওয়ানার। এই ঘটনায় কটাক্ষ বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের।
১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি নিউটাউনেই বসছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকও। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা সিপিএমের পলিট ব্যুরোর কোঅর্ডিনেটর প্রকাশ কারাতেরও। বাংলাদেশ ইস্যুতে সরব রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনুসের অর্ন্তবর্তী সরকারকে হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গিয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে দিলীপ ঘোষকে। দিলীপ ইতিমধ্যেই বাংলাদেশি পণ্য বয়কটের ডাকও দিয়েছেন। এদিকে এহেন পরিস্থিতিতে রেজওয়ানাকে পার্টির অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছে সিপিএম। তাঁর প্রচুর ভক্ত রয়েছে এ রাজ্যেও। ভারত সরকার তাঁকে পুরস্কৃতও করেছে। তবু এই অবস্থায় এমন সিদ্ধান্তে বিতর্কের ঝড়। বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের খোঁচা, ‘‘বাংলাদেশের নাগরিকরা ভারতের বিরোধিতা করছে, গালমন্দ করছে। ওখান থেকেই শিল্পীদের আনতে হচ্ছে কেন? এখানে কি শিল্পী নেই। জানি না কমিউনিস্টদের বুদ্ধি কবে সোজা হবে। এত পীরিত দেখানো ঠিক নয়।’’
ইতিমধ্যেই অবশ্য বাংলাদেশ কাণ্ডে দলের অবস্থান নিয়ে সিপিএমের অন্দরেও প্রশ্ন উঠেছে। পার্টির এরিয়া থেকে জেলা সম্মেলনে প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশ নিয়ে পার্টি কেন বেশি তৎপর নয়? ওপার বাংলায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের আত্মীয় পরিজন এপার বাংলায় বহু রয়েছেন। কাজেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার নিয়ে সিপিএম কম সরব। এপার বাংলার সেই সমস্ত বাসিন্দার কাছে সিপিএম সম্পর্কে ভুল ধারণা যেতে পারে। এসবের মধে্যই রেজওয়ানাকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে সিপিএম কার্যত কী বার্তা দিতে চাইছে তা নিয়েও অবশ্য প্রশ্ন দেখা দিয়েছে পার্টির নিচুতলায়।
এ প্রসঙ্গে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি ঐক্য বজায় থাক।’’ উল্লেখ্য, মধ্যমগ্রাম পুরসভা পরিচালিত পরিবেশ সচেতনতা মেলার উদ্বোধনী সন্ধ্যায় রেজওয়ানার অনুষ্ঠান বাতিলের দাবি উঠেছিল সোশাল মিডিয়ায়। রেজওয়ানার নাম প্রচারে আসতেই আপত্তি তুলেছিল ‘মধ্যমগ্রাম নাগরিকবৃন্দ’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপের সদস্যদের একাংশ। পাশাপাশি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমেই মধ্যমগ্রাম পুরসভার কাছে বাংলাদেশের শিল্পীর অনুষ্ঠান বাতিল করার আবেদনও জানায় তারা। শেষমেশ রেজওয়ানার সঙ্গীতানুষ্ঠান বাতিল হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.