সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পার্টি কংগ্রেসে সিপিএমের নয়া নীতি, দেশজুড়ে অসাম্প্রদায়িক বামপন্থীদের প্রধান শত্রু বিভেদকামী বিজেপি। কিন্তু বাংলায় সিপিএমের রাজনৈতিক লড়াইতে এই নীতি একটু ভিন্ন। এখানে একযোগে লড়াই করতে হবে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এবং কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিরুদ্ধে। রবিবার, লাল পার্টির চার গণসংগঠনের ডাকে ব্রিগেড সমাবেশে সেই সুরই তুললেন সংগঠনের নেতানেত্রীরা। কিন্তু এখানেও সিপিএমের দ্বিচারিতা প্রকাশ্য চলে এল। তৃণমূল রাজনৈতিক শত্রু হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর সুবিধা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন সন্দেশখালির সিপিএম নেতা তথা খেতমজুর সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক নিরাপদ সর্দার। ভাষণে তাঁর গলায় উঠে এল এই প্রকল্পের কথা। বললেন, সকলকে দেওয়া হোক ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’।
রাজ্যে আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি নির্বিশেষে সমস্ত মহিলাকে মাসে মাসে ১০০০ টাকা দেওয়ার প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’। তপসিলি জাতি-উপজাতি মহিলাদের জন্য এই অঙ্ক ১২০০ টাকা। সরকারি তহবিল থেকে এই অর্থ দেওয়া হয় প্রতি মাসে। খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রকল্পের জনপ্রিয়তা নিমেষের মধ্যেই তুঙ্গে উঠেছে। কারণ, এই অর্থ সাধারণ গৃহবধূদের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য এনেছে। তৃণমূলের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধিতা থাকলেও ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে’র জনপ্রিয়তার কথা মনে মনে স্বীকার না করে উপায় ছিল না কমরেডদের। সেই কারণে স্রেফ সরকারি প্রকল্পে সকলের অধিকার আছে, এই মর্মে জেলায় জেলায় গৃহবধূদের ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিয়ে কাজে নেমেছেন সিপিএমের নেতা-কর্মীরা। এই ছবিও দেখা গিয়েছে।
এবার ব্রিগেডের (Bragade) মতো বড় সমাবেশে সেই প্রকল্পের সুবিধার কথা স্বীকার করলেন সিপিএমের (CPM) খেতমজুর সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক নিরাপদ সর্দার। ব্রিগেডে ভাষণ রাখতে গিয়ে বললেন, ”রাজ্যের সকল মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পান, আমরা চাই।” অর্থাৎ এধরনের প্রকল্প যে দরকার, তা মেনেই নিলেন তিনি। তবে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ নিয়ে ভিন্ন সুর শোনা গেল খেতমজুর ইউনিয়নের সর্বভারতীয় নেত্রী বন্যা টুডুর গলায়। বললেন, ”লক্ষ্মীর ভাণ্ডার তো সবাই পাচ্ছি। কিন্তু রাজ্যের লক্ষ্মীদের কোনও মর্যাদা নেই, তাঁদের আবার ভাণ্ডার কীসের? যখন এত এত লক্ষ্মী ধর্ষণের শিকার হন, তখন ভাণ্ডারের কথা কীভাবে বলে?”
মমতা সরকারের আরেক প্রকল্প ‘স্বাস্থ্যসাথী’র কথাও উল্লেখ করে সুবিধার কথা স্বীকার করেছেন আরেক নেতা সুখরঞ্জন দে। তিনি বস্তি উন্নয়ন সমিতির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। বক্তব্য রাখার সময় তাঁর কথায় অভিযোগ আকারে উঠে এল ‘স্বাস্থ্যসাথী’র কথা। বললেন, ”স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে স্বজনপোষণ হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.