রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পার্টি সম্মেলনে এবার কমিটি নিয়ে ভোটাভুটির আগে চা পানের বিরতি নিয়ে সতর্ক সিপিএম। চা পানের বিরতিতেই পেশ হওয়া প্যানেলে কমিটিতে পছন্দ-অপছন্দের প্রার্থী নিয়ে ‘হুইসপারিং ক্যাম্পেন’ চলে। সম্মেলনে প্যানেল পেশের পর প্রতিনিধিদের মধ্যে পছন্দের প্রার্থীর সমর্থনে সেই প্রচার এবার এড়াতে চাইছে আলিমুদ্দিন। একইসঙ্গে লক্ষ্য ভোটাভুটি ও অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠী কোন্দল এড়ানোও। তাই সম্মেলনে নয়া কমিটির প্যানেল পেশের পর চা পানে বিরতিতে নিষেধাজ্ঞা জারি হতে চলেছে। শাখা থেকে এরিয়া কিংবা জেলা কমিটির সম্মেলনে এমনই নির্দেশ দিয়েছে আলিমুদ্দিন।
সম্মেলনের গাইডলাইন সংক্রান্ত নির্দেশিকায় গোপন ব্যালটে নির্বাচন করার পদ্ধতি সংক্রান্ত নিয়মে বলা হয়েছে –
১. সম্মেলনে প্রতিনিধি নির্বাচন পরিচালনার সামগ্রিক তদারকির দায়িত্বে থাকা কমরেড তালিকায় প্রার্থী হিসাবে থাকবেন না।
২. নির্বাচন তদারকি করার দায়িত্বে থাকবেন সম্মেলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত উচ্চতর কমিটির সদস্য অথবা সভাপতিমণ্ডলীতে থাকা বরিষ্ঠ কোনও নেতা।
৩. প্রার্থী তালিকায় প্রথমে সরকারি প্যানেল থাকবে, তার পর ক্রমানুসারী সম্মেলন কক্ষ থেকে প্রস্তাবিত অতিরিক্ত নাম থাকবে।
৪. প্যানেল পেশের পরে আধঘন্টা বা এক ঘন্টা চায়ের বিরতি দেওযার অভ্যাস পরিহার করতে হবে।
৫. ভোট গণনার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিরা নিজেরা প্রার্থী হবেন না।
এই পাঁচ নম্বর নিয়মেই চা পানের বিরতি না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পার্টিতে বিভিন্ন স্তরের কমিটিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা তুলে দেওয়া হল বলে সম্মেলন নির্দেশিকা সংক্রান্ত পার্টি দলিলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য, যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব যাতে পার্টিতে অবদান রাখার সুযোগ পায়। তবে গড় বয়স হ্রাস করার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ তালিকায় অগ্রাধিকার দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। সমস্ত কমিটিতেই নতুন ও পুরনো সমন্বয় রাখার কথা বলা হয়েছে।
উল্লেখ করা হয়েছে, বয়স ও শারীরিক সক্ষমতার প্রশ্নটি কমিটির সদস্যদের ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় রাখতে হবে। নতুন-পুরনো সমন্বয়েই আলাপ-আলোচনা ও বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে এই কাজের অগ্রগতি ঘটাতে হবে। গতবারের থেকে এবার জেলা কমিটিতে মহিলাদের বেশি করে অন্তর্ভুক্তি সুনিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে নির্দেশিকায়। অর্থাৎ, আগামী দিনে পার্টিতে বেশি করে মহিলা মুখ তুলে আনার ক্ষেত্রেই জোর দিয়েছে আলিমুদ্দিন।
এর আগে পার্টি চিঠিতে বলা হয়েছিল, দলে বেশি বেশি করে মহিলাদের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে দুর্বলতা রয়েছে। সেই দুর্বলতা এবার কাটাতে চায় সিপিএম। এছাড়াও নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জেলা কমিটি গঠনের সময়ে গড় বয়স কমিয়ে আনতে হবে। জেলা কমিটি সদস্যদের বর্তমান গড় বয়সের তুলনায় অন্তত ৪ বছর হ্রাস করতে হবে। কমিটির সদস্যদের সর্বোচ্চ বয়স হবে ৭০। তরুণতর অংশকে জেলা কমিটির সদস্য করতে বিশেষ নজর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। অনূর্ধ্ব ৫০ বছর বয়সিদের কমিটির ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে সদস্য করতে হবে। ৪০ বছর বয়সিদের কমিটির আরও ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে রাখতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.