বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: শুধু বিবৃতি নয়। এবার রাস্তায় নেমে তৃণমূলের পাশে দাঁড়াল সিপিআইএমএল (লিবারেশন) (CPIML)। অতিমারির সময়ে রাজ্যের দুই বর্তমান ও দুই প্রাক্তন মন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ দেখাল পার্টি। কোথাও হলো ভারচুয়াল প্রতিবাদ। বিজেপিকে (BJP) ঠেকাতে ভোটের আগে তৃণমূলের সঙ্গে বামপন্থীদের জোটে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করে সাড়া ফেলে দিয়েছিল দীপঙ্কর ভট্টাচার্যর পার্টি।
বিজেপিকে ঠেকাতে তামিলনাড়ুতে ডিএমকে (DMK) বা বিহারে আরজেডির (RJD) সঙ্গে জোট হলে এখানে তৃণমূলের সঙ্গে নয় কেন? প্রশ্ন তুলে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন সিপিআইএমএল লিবারেশনের সাধারন সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। শুরু হয় সমালোচনা, পালটা সমালোচনা। যুক্তি, তর্ক ও বিতর্ক। পরিণতি বাম জোটে ফাটল। আলাদা লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেয় লিবারেশন নেতৃত্ব। রাজ্যের বেশ কয়েকটি আসনে এককভাবে লড়াই করে পার্টি। ‘নো ভোট টি বিজেপি’-প্রচার চালান হয়। ভোটে বিপর্যয় হয় বামেদের। বিপর্যয়ের কারণে আলিমুদ্দিনকে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করায় শরিকরা। কটাক্ষ করতে ছাড়েনি লিবারেশন নেতৃত্ব। শূন্য থেকেও শুরু করা যায় বলে কটাক্ষ ছুড়ে দেন দীপঙ্কর ভট্টাচার্যরা। বক্তব্যের পক্ষে বিহার প্রসঙ্গ টেনে আনা হয়।
লিবারেশন নেতৃত্বের এহেন আচরণ ভালভাবে নেয়নি আলিমুদ্দিন। তার প্রমাণ চার হেভিওয়েটকে গ্রেপ্তারের পর আলিমুদ্দিনের বিবৃতি। বামফ্রন্টগতভাবে বিবৃতি দেওয়া হয়। কেন ১৭ পার্টির জোটের বিবৃতি নয়, তা নিয়েও ওঠে প্রশ্ন। রাতে আলাদা করে লিবারেশনের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের জারি করা বিধিনিষেধকে উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে রাজ্যের শাসকদলের পাশে দাঁড়ায় লিবারেশন নেতৃত্ব। কেন্দ্রের রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক আচরণের বিরোধিতা করা হয়।
পাটির রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ জানান, দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ও কোভিড আক্রান্ত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তখন রাজ্য জুড়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করে সদ্য নির্বাচিত সরকারকে ব্যতিব্যস্ত করছে কেন্দ্র। রাজ্য দখলে বিজেপির চরম ব্যর্থতা ও হতাশা আড়াল করতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে বিজেপি-আরএসএস। সেই জন্য সিবিআই লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরোটাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে জানান তিনি। কেন বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে রাস্তায়? জবাবে লিবারেশন নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, রাজ্যবাসীকে বিজেপি, আরএসএসের এই চক্রান্ত সম্পর্কে সজাগ করতে হবে। কোভিড সংক্রমণ ও লকডাউনে বিপর্যস্ত জনগণের পাশে দাঁড়ানোর সর্বতোভাবে চেষ্টা চালাতে হবে। তাই রাস্তায় নামতে বাধ্য করছে কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ আলিমুদ্দিন। এখন কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বাইড়ে কিছু ভাবছেন না বলে জানান কমরেডকুলের নেতারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.