বু্দ্ধদেব সেনগুপ্ত: সিঙ্গুর থেকে শিক্ষা নিল বামেরা (CPIM)। শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ নীতিতে আনা হল বদল। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলেই জমি অধিগ্রহণ (Land Policy) হবে। চূড়ান্ত ইস্তাহার প্রকাশ করে জানালেন ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তবে সিঙ্গুর থেকে যে শিক্ষা নিয়েছেন তা স্বীকার করেন তিনি।
সিঙ্গুর বামেদের কাছে একটি মাইলফলক। ৩৪ বছর পর ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে সিঙ্গুরকে বিবেচনায় আনে আলিমুদ্দিন। দশ বছর পরেও আজও সেই ঘা দগদগে হয়ে রয়েছে আলিমুদ্দিনের বুকে। নির্বাচন এলেই সামনে চলে আসে সিঙ্গুর প্রসঙ্গ। এবারও ভোটের আগে সেই প্রসঙ্গ এড়াতে পারলেন না লাল পার্টির ভোট ম্যানেজাররা। ইস্তাহারে শিল্পক্ষেত্রে বামেদের জমিনীতির কথা উল্লেখ থাকলেও সুকৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। জমিনীতির বদল প্রসঙ্গ আসতেই অবধারিতভাবে চলে আসে সিঙ্গুর। সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণে ভুল ছিল তা স্বীকার না করলেও শিক্ষা যে বামেরা নিয়েছে তা স্পষ্ট করে দেন ফ্রন্ট চেয়ারম্যান।
বিমান বসু জানান, সিঙ্গুর থেকে শিক্ষা নিয়ে জমিনীতিতে বদল আনা হয়েছে। সরকারে থাকাকালীন অভিজ্ঞতা থেকেই এই শিক্ষাগ্রহণ বলে জানান তিনি। বসতি এলাকায় বসবাসকারী পরিবারের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বামেদের ইস্তাহারে। কোনও জমিতে কুড়ি বছরের বেশি বসবাসকারী পরিবারকে ৯৯ বছরের লিজে জমির মালিকানা প্রদান করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। উদ্বাস্তু ও পিছিয়ে পড়া মানুষের ভোট টানতেই বামেদের এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি সপ্তাহের প্রথমে ইস্তাহারের খসড়া সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। মতামত চাওয়া হয় সাধারণ মানুষের। সমাজের বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট মানুষ মতামত দিয়েছেন বলে জানান বিমান বসু।
কৃষি আমাদের ভিত্তি। শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ। অতীতের এই অবস্থানের সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে ‘কর্মসংস্থান আমাদের লক্ষ্য’। আগে কৃষি ও শিল্পের ওপর জোর দিত বামেরা। এই দুইয়ের ওপর ভিত্তি করে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেওয়া হত। এবার শুধু বেসরকারি নয়, সরকারিক্ষেত্রেও ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে বলে ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আলিমুদ্দিন।
কমরেডকুলের ধারণা, গত ১০ বছরে রাজ্যে সরকারি এবং বেসরকারিক্ষেত্রে নতুন করে কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি। শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। তাই সরকারিক্ষেত্রে কর্মসংস্থান (Employment) সৃষ্টির পাশাপাশি শিল্পের উপর জোর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। গত দেড় দশকে রাজ্যে শিল্পে খরা চলছে। সিঙ্গুরে গাড়ি কারখানা ও নন্দীগ্রামে পেট্রোলিয়াম হাব নির্মাণ বামেদের স্বপ্ন ছিল। এক দশক ক্ষমতার বাইরে থাকায় সেই স্বপ্ন আজও অধরা রয়ে গিয়েছে। শিক্ষিত বেকার যুবকদের মন পেতেই এহেন প্রতিশ্রুতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.