অর্ণব আইচ: থানার অফিসার ও পুলিশকর্মীদের ব্যবহার শোধরানো ও তা ভাল করার উপর জোর দিলেন পুলিশ কমিশনার। ধৃত অভিযুক্ত ও প্রয়োজনে থানায় আটক হওয়া ব্যক্তিদেরও মেডিক্যাল পরীক্ষার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পালন করতে হবে। এই বিষয়েও জোর দিচ্ছে লালবাজার। সিঁথি থানায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রৌঢ়ের মৃত্যুর ঘটনার পর এবার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার নির্দেশে চালু হচ্ছে নতুন আচরণবিধি। এই বিষয়ে বৃহস্পতিবারই পুলিশ কমিশনার প্রত্যেকটি থানার ওসিদের নির্দেশ পাঠিয়েছেন।
এদিন একটি অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার জানান, ডি কে বসুর কেস অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট গাইডলাইন দিয়েছিল। সেটাই রিফ্রেশ করা হয়েছে। সেই গাইডলাইন মেনে চলতে বলা হয়েছে। অভিযুক্তদের মেডিক্যাল পরীক্ষা, সিসিটিভির বিষয়েও নির্দেশ কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে প্রত্যেকটি থানাকে। পুলকার নিয়ে পুলিশ কমিশনারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, পুলকার নিয়ে পরিবহণ দপ্তর ইতিমধ্যেই একটি আচরণবিধি তৈরি করেছে। তার ভিত্তিতেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি সিঁথি থানায় চুরির অভিযোগে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়ই মৃত্যু হয় কাশীপুরের বাসিন্দা রাজকুমার সাউয়ের। এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর পরই লালবাজারের পক্ষ থেকে প্রতে্যকটি থানায় নতুন আচরণবিধি তৈরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এদিন যে নির্দেশিকা পুলিশ কমিশনার থানাগুলিতে পাঠিয়েছেন, তাতে বলা আছে, ডিকে বসু বনাম রাজ্য সরকারের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, তা কঠোরভাবে পালন করতে হবে। জানা গিয়েছে, এই নির্দেশ অনুযায়ী, থানায় গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত অথবা প্রয়োজনে আটক হওয়া ব্যক্তিকে থানায় ঢোকানোর আগে ও বের হওয়ার পর মেডিক্যাল পরীক্ষা করতে হবে। অভিযোগ উঠেছে, রাজকুমার সাউকে সিঁথি থানা গ্রেপ্তার করেনি। তাঁকে পুলিশ জিজ্ঞাসবাদ করলেও কোনও মেডিক্যাল পরীক্ষা করায়নি। এমনকী, জেরা চলাকালীন কোনও প্রয়োজনীয় ওষুধও দেওয়া হয়নি ওই হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে। পুলিশকর্তাদের মতে, এতে পুলিশকর্মীদের উপর চাপ বাড়লেও নিয়ম মেনে চলতে হবে।
এ ছাড়াও থানায় যিনি অভিযোগ করতে আসছেন, তাঁর সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্ত ও যাঁদের আটক করে জেরা করা হচ্ছে, তাঁদের সঙ্গেও ভাল ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। পুলিশকে ব্যবহার শোধরানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে লালবাজার। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশ অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তিকে গ্রেফতার ও নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার পর থানার আধিকারিকরা যেন তাঁর শরীর তল্লাশি করেন। লক আপে তিনি যাতে কোনও অযাচিত বস্তু নিয়ে না ঢুকতে পারেন, তাই এই তল্লাশি চালাতে হবে। লকআপ, সেরেস্তা-সহ থানার প্রতে্যকটি জায়গা যেন সিসিটিভির আওতায় থাকে, সেই বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রতিনিয়ত দেখে নিতে হবে, সিসিটিভি ক্যামেরা চালু রয়েছে কি না। অভিযোগ উঠেছে, রাজকুমার সাউকে অফিসারদের যে ঘরে জেরা করা হয়েছিল, সেখানে সিসিটিভির ফুটেজ ছিল না। তাই থানার ঘরগুলিতে সিসিটিভির ক্যামেরা বসানোর চেষ্টা চলছে। এই আচরণবিধি থানাগুলিকে মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.