অভিরূপ দাস: কোভিড পজিটিভ রোগী। ঘ্রাণ চলে গিয়েছিল। সঙ্গে প্রচন্ড গলা ব্যথা। ওষুধ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিকে কমছিল না গলার কষ্ট। এক্স-রে করেই চক্ষু চড়কগাছ চিকিৎসকদের। খাদ্যনালীতে আটকে নকল দাঁতের পাটি। তা বের করতেই কোভিডের উপসর্গ অনেকটাই কমল। করোনা আবহে কোভিড রোগীর সফল অস্ত্রোপচার করে খুশি নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগের শল্য চিকিৎসকরা।
পিপিই কিট পরে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। ডা. বিশ্বজিৎ শিকদারের নেতৃত্বে এই অস্ত্রপচার টিমে ছিলেন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. প্রণবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়, আরএমও ডা. মধুরিমা রায়, এছাড়াও জুনিয়র রেসিডেন্ট ডা. অর্পিতা, ডা. বিপ্লব, ডা. আইশা, ডা. সম্প্রীতি।
বছর চুয়ান্নর নির্মল রায় দিন তিনেক ধরে জ্বর, শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। রবিবার তার কোভিড টেস্ট হয়। গত ২৭ জুলাই রিপোর্ট আসলে দেখা যায় রোগী কোভিড পজিটিভ। নির্মলবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর গলা ব্যথা মারাত্মক ধরণের ছিল। শ্বাসকষ্ট সাংঘাতিক। পরিবারের লোকেরা ভাবছিলেন সবটাই হয়তো কোভিডের জন্য। কোভিড পজিটিভ ছাড়াও গলাব্যথার জন্য যে দাঁতের পাটিও দায়ী, তা বুঝতে পারা যায়নি। বহুদিন ধরেই দাঁত নেই নির্মলবাবুর। নিচের পাঁটি বাঁধানো। অজান্তেই সেই দাঁতের পাটি গিলে ফেলেছিলেন তিনি।
নীলরতনের চিকিৎসকরাই প্রথমে বিষয়টি লক্ষ্য করেন। সন্দেহ হওয়াতে এক্স-রে করা হয়। তাতেই দেখা যায় দাঁতের পাটি আটকে খাদ্যনালীতে। ইসোফেগাসস্কোপির মাধ্যমে ওই নকল দাঁতের পাটি বের করে আনা হয়। দাঁতের পাটি বের করার পর গলা ব্যথা অনেকটাই কমেছে। আপাতত তাঁকে তরল খাবার দেওয়া হচ্ছে। করোনা আবহে সফলভাবে অস্ত্রোপচার করা একটা বড়সড় চ্যালেঞ্জ ছিল। বিগত দু’মাসে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে অগুনতি রোগীর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে কোয়ারেন্টাইনে যেতে হয়েছিল। তাই অস্ত্রোপচার নিয়ে চিন্তায় ছিলেন চিকিৎসকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.