ছবি: প্রতীকী
অভিরূপ দাস: নিজের জীবন বিপন্ন করে যে চিকিৎসক করোনা রোগীর চিকিৎসা করছেন। কোভিড পজিটিভ হওয়ায় এবার তাঁকেই পাড়া ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছেন প্রতিবেশীরা। অমানবিক এই ঘটনা বেহালার ঠাকুরপুকুরে। বছর ছাব্বিশের স্বরাজদীপ বণিকের বাড়ি কোচবিহারে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তৃতীয় বর্ষে এমডি পাঠরত দিনহাটার ছেলে গত পাঁচ মাস ধরে রয়েছেন বেহালায় তাঁর পিসির বাড়িতে। দুর্ভাগ্যক্রমে বৃহস্পতিবার তিনি তাঁর পিসি এবং অশীতিপর ঠাকুরমা করোনা পজিটিভ হন। করোনা আবহে তিনি রোজই আউটডোরে রোগী দেখেছেন। শনিবার স্বাস্থ্যদপ্তরের পক্ষ থেকে বাড়ি স্যানিটাইজ করা হয়। স্বাস্থ্যদপ্তরের গাড়ি আসতেই পাড়ায় গুঞ্জনের শুরু। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন প্রতিবেশীরা।
অভিযোগ, রক্তের নমুনা নিতে শনিবার দু’ই ভদ্রলোক এসেছিলেন ঠাকুরপুকুরে স্বরাজদীপের পিসির বাড়িতে। তাদের বাইক রাখা নিয়ে প্রথমে একদফা গন্ডগোল হয়। এরপর পাড়ার লোকেরা চিৎকার করে হুমকি দেন স্বরাজদীপের পিসেমশাইকে। তাঁদের প্রশ্ন, “এ পাড়ায় করোনা ছিল না। কেন একজন বাইরের চিকিৎসককে পাড়ায় রাখা হল?” কীভাবে একজন করোনা চিকিৎসা করা ডাক্তারকে বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন তা নিয়েই ক্ষুব্ধ পাড়ার বাসিন্দারা। এদিকে এমন হুমকির পর ভীত চিকিৎসকের পিসতুতো দিদি শ্রাবণী বণিক। সোশ্যাল সাইটে লিখেছেন, “আমার ভাই করোনা রোগীর চিকিৎসা করছে এটা অপরাধ? আমরা কোথায় যাব এবার?”
ঘটনায় প্রতিবেশীদের চূড়ান্ত নিন্দে করেছেন ডা. দ্বীপ্তেন্দ্র সরকার। তাঁর কথায়, এই সময় একজন চিকিৎসকের পরিবারকে লিঞ্চিং বা হেনস্তা করা গর্হিত অপরাধ। তিনি মানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন। যারা এই ধরনের কাণ্ড করছেন তারা জানেন না করোনাকালে পুরনো এপিডেমিক ডিজিসেস আইন সংশোধন করা হয়েছে। এখন কেউ যদি চিকিৎসককে হেনস্তা করেন তবে তাঁর সাতবছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।
সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত ঠাকুরপুকুর থানায় যোগাযোগ করেছেন ওই চিকিৎসক। জানিয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তাঁর সিনিয়রদের। সকলেই পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.