ফাইল ছবি
গৌতম ব্রহ্ম: কোভিড ও নন-কোভিড রোগীদের মধ্যে ভারসাম্য রেখে রাজ্যের বহু মেডিক্যাল কলেজই পরিষেবা দিতে পারছে না। বহু জায়গায় ডাক্তাররা ঠিকমতো আসছেন না। বসছেন না বহির্বিভাগে। ফলে, ফিরে যাচ্ছেন বহু রোগী। অনেক জায়গায় বেড থাকা সত্ত্বেও ফেরানো হচ্ছে সংকটজনক রোগী। এমনই চাঞ্চল্যকর সব অভিযোগে তোলপাড় হল সুপার-প্রিন্সিপালদের নিয়ে স্বাস্থ্যদপ্তরের বুধবারের বৈঠক।
সবচেয়ে বেশি তিরস্কৃত হয়েছে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ। কলেজের প্রিন্সিপাল এদিন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম পরিচালিত ওয়েবিনারে যোগ দিয়েছিলেন। বৈঠকে তাঁকে বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয়। হাসপাতালের বহির্বিভাগে কত রোগী আসছেন? কত ডাক্তার আছেন? কত রোগী ভরতি? কিন্তু একটি প্রশ্নেরও যথাযথ উত্তর দিতে পারেননি প্রিন্সিপাল। বিরক্ত হয়ে স্বাস্থ্যসচিব জানতে চান, হাসপাতালের ‘এমএসভিপি’ কোথায়? সেই প্রশ্নেরও উত্তর মেলেনি। রোগী হেনস্তার জন্য বকুনি খেয়েছেন এসএসকেএম হাসপাতালের এমএসভিপি ডা. রঘুনাথ মিশ্র। একই হাল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজও।
প্রত্যেককেই বলা হয়, কোভিড ও নন-কোভিড দু’রকম চিকিৎসারই ব্যবস্থা রাখতে হবে। কোভিডের জন্য যাতে নন-কোভিড রোগীরা বিপন্ন না হন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক স্বাস্থ্যকর্তা জানালেন, আরজি কর, এনআরএস, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে দূর-দূরান্ত থেকে রোগী আসছেন পরীক্ষা করাতে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়েও কোভিড টেস্ট (COVID-19) করাতে পারছেন না। সাধারণ জ্বরের রোগীকেও কোভিড বলে আইসোলেট করা হচ্ছে।
চিকিৎসকদের একাংশ রোগীদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করছেন যে তাঁদের ডাক্তার বলেই মনে হচ্ছে না। এদিন এই সব কিছু নিয়েই মেডিক্যাল কলেজগুলিকে সতর্ক করা হয়। জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রত্যেকটি হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন করে এ, বি, সি ক্যাটেগরিতে ফেলা হবে। বৈঠকে এক স্বাস্থ্যকর্তা মনে করিয়ে দেন, বিশেষজ্ঞরা মেদিনীপুর ও বীরভূমে গিয়ে দেখে এসেছেন, রোগীদের মধ্যে ন্যূনতম ২ মিটারের ব্যবধানও রাখা হয়নি। এদিকে আবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শৌচাগারে ঢোকাই দায়। অত্যন্ত অপরিষ্কার। এগুলি দ্রুত নিষ্পত্তির প্রয়োজন।
তবে এত কিছুর মধ্যেও প্রশংসা জুটেছে দুই হাসপাতালের। পার্ক সার্কাসের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। স্বাস্থ্যসচিব বাকি মেডিক্যাল কলেজগুলিকে এই দুই হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। জানান, সারি ওয়ার্ড বজায় রেখেও নন-কোভিড রোগীদের পরিষেবা দিয়ে চলেছে ন্যাশনাল। সাগর দত্তও ভারসাম্য রেখে কোভিড, নন-কোভিড রোগীদের পরিষেবা দিচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.