ফাইল ছবি
কৃষ্ণকুমার দাস: চরম উদাসীন ও উন্নাসিক। করোনার (COVID-19) কোপে ত্রস্ত বাংলায় আক্রান্তের মধ্যে কলকাতাই পরিসংখ্যানে শিখরে। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় রাজ্যে শীর্ষ কলকাতা। সেরো সার্ভের রিপোর্টের পর কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল স্বাস্থ্যদপ্তরের। উদ্বিগ্ন ছিলেন কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) নিজেও। তিনি শহরবাসীর চরম উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন এই জন্য। আজ, মঙ্গলবার ফের রাজ্যের কনটেনমেন্ট জোন (Containment Zone) ও বাফার জোনগুলিতে সম্পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ৯ জুলাই বিকেল পাঁচটা থেকে কার্যকর হবে সেই লকডাউন। এই কনটেনমেন্ট জোনের তালিকার মধ্যে কলকাতারই রয়েছে ৩৩টি এলাকা। আগের তুলনায় বেড়েছে। যা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
এদিন নবান্নের তরফে স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, বৃহস্পতিবার থেকে কনটেনমেন্ট জোনে লকডাউন কার্যকর হবে। তবে আগের মতো তিনটি জোনে ভাগ করে নয়, এবার শুধু কনটেনমেন্ট জোনেই (বাফার জোন-সহ) লকডাউন চলবে। রাজ্যে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণ ঠেকাতেই মঙ্গলবার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফিরহাদ হাকিম সোমবারই জানিয়েছিলেন, আক্রান্তদের মধ্যে ৮৫ শতাংশই পাকাবাড়ি ও বহুতলের সম্পন্ন বাসিন্দা। কিন্তু কেউ নিয়ম মানছেন না। করোনার সুরক্ষাবিধি না মানায় বাড়ছে সংক্রমণ। সাউথ সিটি, ডায়মন্ড সিটির মতো শহরের নামী বহুতল আবাসনেও এখন ব্যাপক হারে করোনার দাপট চলছে। যোধপুর পার্ক, ভবানীপুর, আলিপুর, টালিগঞ্জ, বালিগঞ্জ থেকে শুরু করে অভিজাত সমস্ত পাড়াতেই কোভিড সংক্রমণের হার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। শহরের বেসরকারি হাসপাতালের সমস্ত বেডই সম্পন্ন পরিবারের সদস্যরাই ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে একই পরিবারের সদস্যরাই দল বেঁধে কার্যত করোনায় সংক্রমিত হচ্ছেন বলে পুরসভার তথ্য।
পরিস্থিতি সবচেয়ে উদ্বেগজনক উত্তরের উল্টোডাঙা ও দক্ষিণের ভবানীপুরে। ভবানীপুরের এলগিন রোড, শরৎ বোস রোড, চক্রবেড়িয়া রোড অঞ্চল থেকে গত দু’সপ্তাহে ৫৪ জন আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল। অধিকাংশই সম্পন্ন পরিবারের। উল্টোডাঙাতেও একই অবস্থা। সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাব, উদাসীনতা, লকডাউনের নিয়ম না মানা, রোগ লুকিয়ে রাখা সবই কোভিড পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বাড়ার পিছনে রয়েছে বলে মনে করছেন পুরসভার মুখ্য প্রশাসক। এখনও যদি মানুষ সতর্ক না হোন তাহলে ভবিষ্যতে লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়াতে হতে পারে বলে মনে করছে পুরসভা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.