Advertisement
Advertisement

ভ্রূণ অসুস্থ! ২৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বার গর্ভপাতের আরজি কোর্টে

গত জুলাইয়ে পশ্চিমবঙ্গের ২৬ সপ্তাহের অন্ত্বঃসত্ত্বা বধূকে ভ্রূণ নষ্ট করার অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

Court to hear abortion plea
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:January 11, 2019 9:54 am
  • Updated:January 12, 2019 1:36 pm  

শুভঙ্কর বসু: গর্ভের ভ্রূণ অসুস্থ! কোনওভাবেই সেটি বাঁচানো সম্ভব নয়। গর্ভপাত করানো না গেলে মায়ের জীবনহানির পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু দেশের আইন অনুযায়ী গর্ভপাতের সময় পেরিয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গর্ভপাত করাতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ দক্ষিণ কলকাতার এক দম্পতি।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে মামলাটির শুনানি হলেও আদালত কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। আজ শুক্রবার জানাতে পারে। মামলার বয়ান মোতাবেক, যোধপুর পার্কের বাসিন্দা ওই বধূ ২৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। সম্প্রতি ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় জানতে পেরেছেন, তাঁর গর্ভের ভ্রূণ ঠিকঠাক বাড়েনি। শুধু তাই নয়, ভ্রূণের মস্তিষ্কের বিকাশও হয়নি। মামলাকারীর দাবি, চিকিৎসকরা বলেই দিয়েছেন শিশুটি ভুমিষ্ঠ হলেও বাঁচার সম্ভাবনা নেই। এমনকী, ভুমিষ্ঠ হওয়ার আগে মাতৃজঠরেই তার মৃত্যু হতে পারে। এবং সেক্ষেত্রে মায়ের জীবনহানির আশঙ্কা প্রবল। অথচ আইন অনুযায়ী গর্ভপাতের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মহিলার জীবনরক্ষার স্বার্থেই আদালতের হস্তক্ষেপ চাওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ভারতের গর্ভপাত সংক্রান্ত আইন টার্মিনেশন অফ প্রেগনেন্সি অ্যাক্ট ১৯৭১ অনুযায়ী গর্ভপাতের নির্ধারিত সময়সীমা হল ২০ সপ্তাহ। এই সময় পেরোনোর পর ভ্রূণ নষ্ট করা আইনত অপরাধ। যদিও কয়েকটি ক্ষেত্রে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছে দেশের বিভিন্ন আদালত। গত জুলাইয়ে পশ্চিমবঙ্গের ২৬ সপ্তাহের অন্ত্বঃসত্ত্বা এক বধূকে এমনই ‘বিশেষ পরিস্থিতিতে’ ভ্রূণ নষ্ট করার অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বস্তুত গর্ভপাত ইস্যু ঘিরে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিতর্ক দানা বেঁধেছে। যার অন্যতম উদাহরণ, আয়ারল্যান্ডে ভারতীয় বংশোদ্ভূত বধূর অকালমৃত্যু। সেদেশে বারো সপ্তাহের পর গর্ভপাত করানোয় ভীষণই কড়াকড়ি। তার জেরে ২০১২ সালে সবিতা হালাপ্পানাভার নামে ৩১ বছরের মহিলা মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। তিনি ১৭ সপ্তাহের অন্ত্বঃসত্ত্বা ছিলেন। এর জেরে আয়ারল্যান্ডের গর্ভপাত আইন সমালোচনার প্রবল ঝড়ের মুখে পড়ে। আন্তর্জাতিকমহল তোলপাড় হয়।

Advertisement

স্বভাবতই গর্ভপাতের মতো এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানোর আগে আদালতও চাইছে সব দিক যাচাই করে নিতে। এদিন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে দম্পতির আইনজীবী অমিতাভ ঘোষ সওয়াল করতে গিয়ে বলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর মহিলার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ওঁদের ডাক্তারবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, অবিলম্বে গর্ভপাত প্রয়োজন। এরপর ৭ জানুয়ারি আরেক জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও একই পরামর্শ দিয়েছেন। এমতাবস্থায় আদালত একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে ভ্রূণটি নষ্টের অনুমতি দিক। সওয়ালের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন তিনি। এরপর রাজে্যর মতামত জানতে চান বিচারপতি চক্রবর্তী। আদালতে উপস্থিত অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অভ্রতোষ মজুমদার সময় চান। তিনি বলেন, “এসএসকেএমের বিশেষ চিকিৎসকদের পরামর্শ প্রয়োজন। তাই সময় দেওয়া হোক।” এরপরই বিচারপতি আজ শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্য সরকারকে সময় বরাদ্দ করেন। রাজ্যের মতামত শোনার পর আজ এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে আদালত। বধূর স্বামীকে আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

[মাকে মার বাবার, রুখে দাঁড়িয়ে প্রহৃত মেয়েও]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement