সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কুণাল ঘোষের করা মানহানির মামলায় এবার রীতিমতো বিপাকে শতরূপ ঘোষ, মহম্মদ সেলিম, বিমান বসুরা। তিনজনকেই সমন পাঠাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত। আগামী ১৩ জুন তাঁদের আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের সমন হাতে পেয়েই ফের হুঙ্কার ছাড়লেন কুণাল। তৃণমূল (TMC) মুখপাত্রর খোলা চ্যালেঞ্জ, ‘মুরোদ থাকলে এই সমন উপেক্ষা করে দেখান।’
ঘটনার সূত্রপাত কিছুদিন আগে। বাম নেতা শতরূপ ঘোষের গাড়ি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। প্রশ্ন তুলেছিলেন, ২০২১ সালে নির্বাচনী হলফনামায় যেখানে মাত্র ২ লক্ষ টাকা সম্পত্তি দেখিয়েছিলেন শতরূপ, সেখানে ২০২৩ সালে কীভাবে ২২ লাখি গাড়ির মালিক হলেন তিনি। সিপিএমের (CPIM) হোলটাইমার হয়ে এত দামি গাড়ি চড়াটা কি নীতিবিরুদ্ধ নয়? কুণালের সেই মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে মাত্রা ছাড়ান শতরূপ। গাড়ির রহস্যভেদ করতে গিয়ে কুণালের বাবাকে জড়িয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন। শতরূপ দাবি করেন, গাড়িটি তাঁর বাবা শিবনাথ ঘোষের টাকায় কেনা। এরপরই কুণাল ঘোষকে আপত্তিকর ভাষায় আক্রমণ করেন শতরূপ। বলেন, “আমার বাবা আছে। সবার বাবা থাকে। তাঁরা গিফটও দেন। আশা করি কুণালবাবুরও ছিলেন, যদি না উনি টেস্ট টিউব বেবি হয়ে থাকেন।” শুধু তাই নয়, কুণাল ঘোষের বেনামি ভাই থাকতে পারে বলেও কটাক্ষ করেছিলেন।
সিপিএমের সদর দপ্তরে বসে করা শতরূপের ‘অপমানজনক’ মন্তব্যের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন কুণাল। সেই মামলায় যোগ করা হয় বিমান বসু (Biman Bose) ও মহম্মদ সেলিমকেও (Mohammad Selim)। কুণালের অভিযোগ, সিনিয়ের নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতা না থাকলে দলীয় দপ্তরে বসে এই ধরনের কথা বলতে পারতেন না শতরূপ। মামলা করার আগে অবশ্য সিপিএমের তিন নেতাকেই আইনি চিঠি পাঠিয়ে তাঁদের ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন কুণাল ঘোষ। কিন্তু সেই চিঠি তাঁরা উপেক্ষা করেন। তারপরই কলকাতা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে মামলা দায়ের করেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক। গত ৫ এপ্রিল সেই মামলা গ্রহণ করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। এবার সেই মামলায় তিন সিপিএম নেতাকেই সমন পাঠানো হয়েছে।
আদালত সিপিএম নেতাদের সমন পাঠাতেই ফের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন কুণাল। তাঁর বক্তব্য,”রাজনীতিতে বিরোধ থাকতেই পারে। আমি ২২ লাখি যুব নেতাকে নীতিগত প্রশ্ন করেছিলাম। কিন্তু তাতে ও আমার শ্রদ্ধেয় বাবাকে তুলে গালিগালাজ করছে। আমি চ্যালেঞ্জ করছি মুরোদ থাকলে আদালতের এই সমন উপেক্ষা করে দেখান।” তৃণমূল নেতার বক্তব্য, “সিপিএম ত্রয়ী যে ঔদ্ধত্যে আইনজীবীর নোটিসটিকে অগ্রাহ্য করেছিলেন, এখন আবার সেই ঔদ্ধত্যের মুরোদ হবে কি? সিপিএম নেতাদের সামনে তিনটে পথ- এক, মাথা নিচু করে আদালতে হাজির হওয়া। দুই, কোর্টে নিজেরা না এসে আইনজীবী দিয়ে সমন ঠেকাতে লড়তে নামা। তাতেও অবশ্য সেই কোর্টে আসাই হল। আর, তিন ঔদ্ধত্যের সঙ্গে অগ্রাহ্য করা। সেটা আইনবিরুদ্ধ। দেখি এদের সেটা করার মুরোদ হয় নাকি?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.