Advertisement
Advertisement

কপ্টারের টিকিট জাল, বিদেশে পালানোর আগেই কলকাতায় গ্রেপ্তার ‘বান্টি-বাবলি’

লেকটাউনে বসে জাল টিকিটের কারবার ফেঁদে বসেছিল 'বান্টি-বাবলি'।

Couple who duped travfellers with fake tickets held

ছবি: প্রতীকী

Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:July 31, 2019 5:15 pm
  • Updated:July 31, 2019 5:15 pm  

অর্ণব আইচ: কেদারনাথ থেকে হেলিকপ্টার করে ফেরার জন্য লাইন দিয়েছিলেন কলকাতার পর্যটকরা। কিন্তু ওঠার আগেই কর্তৃপক্ষ তাঁদের টিকিট দেখেই হতবাক। জানালেন, এই টিকিট সম্পূর্ণ জাল। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে পর্যটকদের। তাঁদের ট্রাভেলিং এজেন্টকে জানানো পর হতবাক হয়ে যান তিনিও। যে দম্পতি টিকিট কাটার দায়িত্বে ছিল, তাদের ফোন করতেই দেখা যায়, মোবাইল ফোন বন্ধ।

[আরও পড়ুন: পুজো কমিটির দখল ঘিরে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ, উত্তপ্ত রাসবিহারী অ্যাভিনিউ]

Advertisement

কলকাতার উপকণ্ঠ লেকটাউনে বসে জাল টিকিটের কারবার ফেঁদে বসেছিল ‘বান্টি-বাবলি’। শহরের বহু ভ্রমণপ্রিয় মানুষ ও ট্রাভেলিং এজেন্টকে জাল টিকিট গছিয়ে দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে উধাও হয়ে যায় অভিষেক দাস ও তার স্ত্রী সুদীপ্তা। এই বিষয়ে দক্ষিণ কলকাতার একটি ট্রাভেলিং এজেন্ট সংস্থার কর্ণধার নিউ আলিপুর থানার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। পলাতক দম্পতির সন্ধান পাওয়া খুব সহজ ছিল না। একই মোবাইলে সাতটি সিমকার্ড পালটানোর পরও রক্ষা পায়নি তারা। টাকা হাতিয়ে বিদেশে পালানোর আগেই নিউ আলিপুর থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ওই দম্পতি। তাদের কম্পিউটার থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর ট্রেন, বিমান ও বিভিন্ন ধরনের জাল টিকিট। বিভিন্ন ব্যাংকের ১৩টি অ্যাকাউন্ট থেকে উদ্ধার হয়েছে ২০ লাখ টাকা। এখনও পর্যন্ত অন্তত ৪৩ জন নিউ আলিপুর থানায় ওই বান্টি-বাবলির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, লেকটাউনের ক্যানেল রোডে গত জানুয়ারি মাসে ব্যবসা ফেঁদে বসে ওই দম্পতি। খুলে ফেলে ঝাঁ চকচকে অফিস। বিভিন্ন জায়গা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়ে জানায়, তারা খুব তাড়াতাড়ি, তিন থেকে চার মিনিটের মধ্যে যে কোনও ট্রেন ও বিমানের টিকিটের বন্দোবস্ত করে দেয়। ফলে তাদের অফিসে অচিরেই ভিড় বাড়তে শুরু করে ভ্রমণপ্রিয় শহরবাসীর। বেশি টাকা কমিশন নিয়ে তারা টিকিট দিতে শুরু করে। প্রচুর ট্রাভেলিং এজেন্টও দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগ করে। রীতিমতো সস্তায় টিকিট দিতে শুরু করে তারা। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন নিউ আলিপুরের এক ট্রাভেল এজেন্ট স্বাতী ঘোষ। তিনি কলকাতা থেকে ১৬ জন পর্যটককে কেদারনাথে পাঠান। তাঁদের সেখান থেকে ফেরার জন্য জন্য হেলিকপ্টারের টিকিটের ব্যবস্থা করেন। দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কেটে দেয় হেলিকপ্টারের টিকিট। তিনি টিকিটের দাম বাবদ দম্পতিকে ৫ লাখ ২২ হাজার ৪৮০ টাকা দেন। দম্পতি হেলিকপ্টারের টিকিটও দেয়। পর্যটকরা টিকিট হাতে হেলিকপ্টারে ওঠার সময় জানতে পারেন সেগুলি জাল। একই সঙ্গে আরও হোটেল ও বিভিন্ন টিকিট সংক্রান্ত বিষয়ে অনেক পর্যটক সমস্যায় পড়েন। তাঁরা ট্রাভেল এজেন্টকে বিষয়টি জানান। তিনি ওই দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে দেখেন, তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ। তিনি নিউ আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ লেকটাউনে গিয়ে জানতে পারে যে, গত ফেব্রুয়ারি মাসেই অফিস বন্ধ করে উধাও হয়ে গিয়েছে তারা। বন্ধ করে দেওয়া মোবাইল নম্বর ঘেঁটে তাদের আত্মীয়কে শনাক্ত পুলিশ। এভাবে দেখা যায়, একের পর এক সিমকার্ড পাল্টে চলেছে তারা। নিজেদের মধে্যও ফোনে কথা বলে প্রমাণ করতে চাইছে যে, তারা আলাদা থাকছে। এর মধে্যই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বান্টি-বাবলির ছবি জোগাড় করে পুলিশ। সেই সূত্র ধরেই তাদের খোঁজ চলে।

সম্প্রতি এক প্রতারিত ট্রাভেল এজেন্ট বিরাটিতে অভিযুক্ত অভিষেককে ধরে ফেলেন। ধরা পড়ার ভয়ে নিজের ফোন নম্বর দিয়ে কোনওমতে পালিয়ে যায় ওই প্রতারক। এজেন্ট অভিষেককে ফোন করেছিলেন। পুলিশের কাছে বিষয়টি ধরা পড়ে। ওই এজেন্টকে জিজ্ঞাসা করেই পুলিশ আধিকারিকরা জানতে পারেন যে, বান্টি-বাবলি পাসপোর্ট তৈরি করেছে। এবার বিদেশে পালানোর চেষ্টা করছে তারা। সেইমতো পুলিশ দমদম বিমানবন্দরের কাছে ফাঁদ পাতে। পালানো আগেই ছবি দেখে পুলিশ তাদের ধরে ফেলে। ধৃত দম্পতিকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: সব জল্পনার অবসান, বিধাননগরের নয়া মেয়র হচ্ছেন কৃষ্ণা চক্রবর্তী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement