সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁর চিকিৎসার জন্য ছ’জন চিকিৎসকের কোভিড টিম ছিল। কিন্তু সেই কোভিড টিমও বাঁচাতে পারল না তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান বিধায়ক তমোনাশ ঘোষকে। দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন ৬০ ছুঁইছুঁই এই রাজনীতিবিদ। কিন্তু রক্তের শর্করার আধিক্য মৃত্যুকে আরও ত্বরান্বিত করে দিল। সময়ে সতর্কতা না নেওয়ার ফলে করোনার ছোবলে মৃত্যু হল ফলতার বিধায়কের। তমোনাশ ঘোষের মৃত্যুতে তৃণমূল কংগ্রেস-সহ রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে। তবে তাঁর মৃত্যুর পর চিকিৎসকরা মনে করছেন, গোড়াতেই যদি অসুস্থতাকে গুরুত্ব দিতেন তমোনাশবাবু তাহলে পরিণতি এত করুণ হত না।
তমোনাথ ঘোষের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস কো-মরবিডিটির কাজ করেছে বলে মত চিকিৎসকদের। এতেই তাঁর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা কমে যায়। অ্যাপোলো হাসপাতালে ভরতি ছিলেন তমোনাশবাবু। মাসখানেক আগে যখন তিনি ভরতি হন তখন তাঁর তীব্র শ্বাসকষ্ট। ভরতি হওয়ার কিছুদিন পর নিউমোনিয়া ও বুকে সর্দি জমার সমস্যা দেখা দেয়। দিন দশেক পরে সার্জারি করে সেই কফ বের করেও কোনও লাভ হয়নি। এরপরে তাঁর স্ট্রোক হয়। তারপর গত তিনদিনে দ্রুত তাঁর শারীরিক অবনতি হয়েছিল। একে একে কিডনি, লিভার, ফুসফুস সব অর্গ্যান কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে তমোনাশবাবুর মৃত্যুর জন্য ‘মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওর’কে দায়ী করেছে। হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ছয় চিকিৎসকের কোভিড টিমের তত্ত্বাবধানে ছিলেন তমোনাশবাবু। সেই টিমের নেতৃত্বে ছিলেন ডা. আসিফ ইকবাল। জানা গিয়েছে, ভরতির পর থেকেই শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল না বিধায়কের। মাঝে কিছুটা উন্নতি হলেও পরে মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওর হয়। কোভিডের সঙ্গে কো-মরবিডিটি জোড়া ফলায় করুণ পরিণতি হয় তমোনাশবাবুর।
দিনকয়েক আগে সাংবাদিক বৈঠকে ফলতার বিধায়কের শারীরিক অবস্থা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রোগ যাতে কেউ না লুকিয়ে রাখেন সেকথা জানিয়েছিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। আশঙ্কাই যেন সত্যি হল। ৩৫ বছরের সঙ্গীকে হারিয়ে শোকাহত মুখ্যমন্ত্রী। শোকপ্রকাশ করে বুধবার টুইটও করেন তিনি। বর্ষীয়ান রাজনীতিকের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক দলের অন্যান্যরাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.