সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যের প্রথম করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর পরই শুরু হয়েছিল টানাপোড়েন। পরিবারের সদস্যরা আইসোলেশনে থাকায় পরিজনের হাতে দেহ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল হাসপাতাল। কিন্তু স্রেফ সংক্রমণের ভয়ে দেহ নিতে অস্বীকার করেন তিনিও। এমনকী দেহ নিমতলা শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। অবশেষে রাত সাড়ে ১২ টা নাগাদ ওই প্রৌঢ়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল।
সোমবার রাজ্যে প্রথম করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়। এরপরই হাসপাতালের তরফে জানানো হয় যে, প্রৌঢ়ের দেহ সৎকারের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা যায় যে, ওই প্রৌঢ়ের শরীরে ব্যবহৃত জীবনদায়ী যেকোনও নল খুব সাবধানে খুলে নেওয়া হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে কোনও লালারস তাঁর শরীর থেকে না বেরোয়। এরপর এক শতাংশ হাইপোক্লোরাইড সলিউশন দিয়ে নল ব্যবহারের ফলে দেহে তৈরি হওয়া ছিদ্র বন্ধ করতে হবে। তৃতীয় পর্যায়ে মৃত ওই ব্যক্তির নাক এবং কানের ছিদ্রও বন্ধ করে দেওয়া হবে। একটি জীবাণুনাশক প্লাস্টিক ব্যাগে ঢোকানো হবে দেহ। তারপর আরও একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ দেহ মুড়ে দেওয়া হবে। প্রতিটি প্লাস্টিক ব্যাগের মধ্যে দেওয়া হবে এক শতাংশ হাইপোক্লোরাইড সলিউশন। এরপর দেহটি পরিজনরা চাইলে দেখতে পারেন। যারা সৎকার করবেন তাঁদেরও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলা হয়।
কিন্তু সমস্ত প্রক্রিয়া শেষে দেহ পরিজনদের কাছে তুলে দেওয়ার সময়ই শুরু বিপত্তি। কারণ ওই প্রৌঢ়ের স্ত্রী, মা ও শাশুড়ি বেলেঘাটা আইডিতে চিকিৎসাধীন। ছেলে বিদেশে কর্মরত। ফলে দেহ হস্তান্তরের জন্য আত্মীয়ের খোঁজ শুরু হয় হাসপাতালের তরফে। হাসপাতালের নথি খতিয়ে দেখে একজনের হদিশ মিললেও দেহ নিতে অস্বীকার করেন তিনি। এরপর প্রশাসনের সহযোগিতায় শববাহী গাড়িতে দেহটি পাঠানো হয় নিমতলা শ্মশানে। সেখানেও জটিলতা তৈরি হয়। এলাকাবাসীরা ওই প্রৌঢ়ের দেহ ওই শ্মশানে পোড়ানোর ক্ষেত্র আপত্তি জানায়। পুলিশ-প্রশাসনের চেষ্টা দীর্ঘক্ষণ পর সমস্যার সমাধান হয়। রাত সাড়ে ১২ টা নাগাদ শেষ হয় সৎকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.