Advertisement
Advertisement
বাঙুর হাসপাতাল

ভয়ে কাঁপছে বাঙ্গুর হাসপাতাল, কোয়ারেন্টাইনে করোনা আক্রান্ত তরুণের চিকিৎসক

অভিযোগ, করোনা আক্রান্তকে পরীক্ষা করা স্টেথোস্কোপ দিয়েই অন্যান্য রোগী দেখেছেন ওই চিকিৎসক।

Coronavirus scare at Bangur hospital, doctor under scanner
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:March 18, 2020 4:29 pm
  • Updated:March 18, 2020 8:57 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: কলকাতাতেও করোনার থাবা। COVID-19 ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার বেলেঘাটা আইডিতে ভরতি হয়েছেন ইংল্যান্ড ফেরত তরুণ। কিন্তু তার আগে সোমবার সেই তরুণ পৌঁছেছিলেন দক্ষিণ কলকাতার এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে। মায়ের সঙ্গে দীর্ঘ আধ ঘণ্টা হাসপাতালে কাটিয়েছিলেন তিনি। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে স্টেথোস্কোপ দিয়ে পরীক্ষাও করেন। অভিযোগ, সেই স্টেথোস্কোপই অন্যান্য রোগী দেখার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। মঙ্গলবার সন্ধেয় তরুণ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন জানার পর থেকেই তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বাঙ্গুরে ভরতি রোগীদের মধ্যে। যদিও সুপারের দাবি, ওই স্টেথোস্কোপ স্টেরিলাইজ করা হয়েছিল। 

আক্রান্ত তরুণ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ‌্যালয়ের ছাত্র। সম্প্রতি ইংল‌্যান্ডে একটি জন্মদিনের পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। সেই পার্টিতেই বেশ কয়েকজন করোনা সংক্রামিত যুবক-যুবতী উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সেখান থেকেই ওই তরুণের শরীরে ছড়িয়েছে করোনার ভাইরাস। কিন্তু কলকাতা বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক‌্যানিংয়ে উপসর্গ ধরা পড়েনি। তবে বাড়ি ফিরলে স্বাস্থ্য দপ্তরের পরামর্শে তাঁকে সেল্‌ফ কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। সোমবার বেলা ১টা নাগাদ মায়ের সঙ্গে বাঙ্গুর হাসপাতালে পৌঁছন ওই তরুণ। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, আক্রান্তের মা রাজ্যের একজন উচ্চপদস্থ আমলা। স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিকের সঙ্গে আগেভাগেই তিনি কথা বলে রেখেছিলেন বলে আউটডোরের লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে হয়নি। তাঁরা গিয়ে ডেপুটি সুপারের ঘরে বসেছিলেন। সেখানেই এক রোগী সহায়কের সাহায্যে ডাক্তার এসে তরুণের পরীক্ষা করেন। পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করেন স্টেথোস্কোপও। সেখানেই তাঁকে বেলেঘাটা আউডিতে ভরতির পরামর্শ দেওয়া হয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: করোনা নিয়ে গুজব ছড়ালেই কড়া শাস্তি! হুঁশিয়ারি সিপি অনুজ শর্মার]

পরের দিনই পালটে যায় ছবিটা। তরুণের লালারসের নমুনা পরীক্ষায় Covid-19 পজিটিভ পাওয়া যায়। তখন থেকেই তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বাঙ্গুরে। অভিযোগ, ওই স্টেথোস্কোপ দিয়েই বাকি রোগীদের পরীক্ষা করেছিলেন চিকিৎসক। এমনকী ওয়ার্ডে রাউন্ডে গিয়েছিলেন তিনি। যদিও সুপার জানান, তরুণকে দেখার পর ওই স্টেথোস্কোপ স্টেরিলাইজ করা হয়েছিল। যদিও রোগীর পরিবার এই তথ্য বিশ্বাস করছে না। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানালেন, ওই চিকিৎসক রাউন্ডে এসে স্টেথোস্কোপ দিয়েই তাঁদের বাচ্চাদের পরীক্ষা করেছেন। তাছাড়া ওই তরুণের শরীর থেকে ডাক্তার ও রোগী সহায়কের শরীরে ভাইরাস ঢুকে পড়ার আশঙ্কা থেকেই গিয়েছিল। তরুণ হাসপাতাল ছাড়ার পরই ডেপুটি সুপারের ঘরটিকে জীবাণুমুক্ত করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে যায়। তবে আতঙ্ক এতই তীব্রতর হয়ে ওঠে যে কোনও বুঁঝি নিতে চায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বুধবার ওই চিকিৎসক এবং সেই রোগী সহায়ককে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।

সুপার ডা. শিশির নস্করের দাবি, তরুণ যে দেশে ফেরার পর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেরিয়েছেন কিংবা ইংল্যান্ডে করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছেন, এসব তথ্য গোপন করেছিলেন। পরে সবটা জানতে পেরে স্বাস্থ্য ভবনে খবর দেওয়া হয়। তারপরই ওই চিকিৎসক ও রোগী সহায়ককে কোয়ারেন্টাইন পাঠানো হয়। তবে এখনও ভয়ে কাঁটা হয়ে রয়েছেন হাসপাতাল কর্মী ও সেখানে ভরতি রোগীরা।

[আরও পড়ুন: করোনা ঠেকাতে গোমূত্র পান করানোর অভিযোগ, গ্রেপ্তার কলকাতার বিজেপি নেতা]

এদিকে, এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ নবান্নও। বিলেত ফেরত ছেলে বাড়ি আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিয়েই নবান্নে পৌঁছেছিলেন তাঁর মা। সরকার যেখানে করোনা মোকাবিলায় নানা পদক্ষেপ করেছে, সেখানে এক আমলা এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করায় নবান্নের অন্দরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও গোটা বিষয়টি নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement