Advertisement
Advertisement
comorbidity

অন্য উপসর্গ থাকলেও ডেথ সার্টিফিকেটে করোনার উল্লেখ রাখতে হবে, মত চিকিৎসকদের

আইসিএমআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফেও এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

coronavirus have to mention in comorbidity patients death
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:June 11, 2020 6:41 pm
  • Updated:June 11, 2020 6:48 pm  

ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: মৃত্যু হচ্ছে ক্যানসারে। কিন্তু, নাম হচ্ছে করোনা ভাইরাসের। অথবা আগে থেকেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন কোনও রোগী। কিন্তু, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এমনটা কেন?

স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের মতে, রাজ্যে করোনায় মৃতদের অন্তত ৮০ থেকে ৯৫ শতাংশ কেস হিস্ট্রি সমীক্ষা করলে দেখা যাবে তাঁরা আগে থেকেই কোনও না কোনও রোগে ভুগছিলেন। করোনা ভাইরাস মানব শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে বিকল করে, মৃত্যুকে আরও ত্বরান্বিত করছে। আর এটাই কো-মরবিডি। অর্থাৎ অন্য উপসর্গ না থাকলে কোভিড-১৯ (Covid-19) ভাইরাসে মৃত্যুই হয় না।

Advertisement

[আরও পড়ুন: পোড়ানো হচ্ছে করোনায় মৃতদের দেহ! গুজবে গড়িয়া মহাশ্মশানে ধুন্ধুমার স্থানীয়দের]

তাহলে কো-মর্বিডিটি নিয়ে এত বিতর্ক কেন?

এই প্রসঙ্গে নাইসেডের এক আধিকারিক একটি পালটা প্রশ্ন করেছেন। তাঁর কথায়, ধরা যাক আগের দিন সকালে মাঠে কাজ করার সময় এক ব্যক্তিকে সাপে কাটে। তিনি হাসপাতালে যাননি। উপসর্গও নেই। কিন্তু, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে ডাক্তারবাবু কি লিখবেন? উত্তর অবশ্যই পথ দুর্ঘটনা।

কিন্তু, সাপের কামড়ও ‘ইনিসিডেন্ট কজ’ বা কারণ হিসেবে উল্লেখ্য করতে হবে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর সংশাপত্রে। এমনটাই বলা হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনে। প্রায় একই বক্তব্য আইসিএমআরের। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ময়নাতদন্তের সময় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ যদি মৃত ব্যক্তির শরীরে সাপের কাটার দাগ পান তবে অবশ্যই তা উল্লেখ্য করতে হবে। একই কথা বলছেন বর্তমানের বেশিরভাগ চিকিৎসকরা। আর এই যুক্তিতেই করোনা রোগীর মৃত্যুর সংশাপত্রে অন্যান্য উপসর্গ যাই থাকুক না। কেন মূল কারণ বা ‘কজ অফ ডেথ’ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ লিখতে হবে। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে অন্য উপসর্গের উল্লেখ করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আইসিএমআর (ICMR) এবিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের চিকিৎসকরা।

আরজি কর মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল ও ফরেনসিক মেডিসিনের অধ্যাপক ড. শুদ্ধোধন বটব্যাল উপরের উদাহরণ টেনে বলেছেন, ‘এই ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর মূল কারণ অবশ্যই পথ দুর্ঘটনা। সেটাই ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ্য করতে হবে। কিন্তু, ময়নাতদন্তের সময় যদি সাপে কাটার চিহ্ন বা সামান্যতম বিষ শরীরে পাওয়া যায় তাও উল্লেখ করতে হবে। নয়তো পরবর্তীকালে কোনও তদন্তের প্রয়োজন হলে বিষয়টি অজানাই থেকে যাবে। এই এক যুক্তিতেই করোনা আক্রান্তের অন্য উপসর্গ থাকলেও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণকে ডেথ সার্টিফিকেটে প্রথম কারণ হিসেবে উল্লেখ্য করার জন্য স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই নির্দেশ আইসিএমআর দেশের সব করোনা হাসপাতালগুলোকেও জানিয়ে দিয়েছে।

[আরও পড়ুন: নিউটাউনের গেস্ট হাউসে নাবালিকাকে গণধর্ষণ, হাজতে দুই অভিযুক্ত]

স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের এক অধ্যাপকের ব্যাখ্যা, এটা ঘটনা যে হাই ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস, কিডনি বা ক্যানসার রোগীদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। মৃত্যু হারও বেশি। কিন্তু, কারও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যু হলে মূল কারণ করোনা পজিটিভ লিখতে হবে। এটাই নিয়ম।

স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধিকর্তা ডা: প্রতীপ কুণ্ডু এই প্রসঙ্গে বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ অনুযায়ী শিশুর জন্মের ৪২ দিনের মধ্যে কোনও মহিলার মৃত্যু হলে তা প্রসূতি মৃত্যু হিসেবে চিহ্নিত হবে। এই ক্ষেত্রে অন্য নিয়ম খাটবে না। একইরকম নিয়ম করোনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement