সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে করোনা আতঙ্ক। ভাইরাস মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশে গোটা দেশেই লকডাউন। এরই মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে সংবাদপত্র নিয়ে। রটনা যে, সংবাদপত্র থেকে নাকি ভাইরাস ছড়াতে পারে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) আগেই জানিয়েছে, এই খবর ভিত্তিহীন। এ থেকে করোনার সংক্রমণ ছড়ায় না। একই কথা বলেছে কেন্দ্র। এবার পাঠকদের কাছে যাতে সংবাদপত্র পৌঁছতে সমস্যা না হয়, তার জন্য পদক্ষেপ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বলে দিলেন, “সংবাদপত্রের কর্মীরা দিন-রাত কষ্ট করছে আপনাদের কাছে খবর পৌঁছে দেবে বলে। কিন্তু বর্তমানে পরিবহনে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে ওদের কাজে বাধা দেবেন না। পুলিশকে বলে দিয়েছি হকারদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে। ভেন্ডাররা দূরত্ব বজায় রেখে কাগজ সংগ্রহ করবেন, তাহলেই হবে। সংবাদপত্রের মালিকদের বলব, প্রয়োজনে হকারদের জন্য পরিচিতিপত্র চালু করতে। আপনারা নিশ্চিন্তে খবরের কাগজ পড়ুন।” এর আগে মঙ্গলবার কেন্দ্র জানিয়েছিল, সংবাদপত্রের নিয়মিত প্রকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পাঠকদের কাছে সঠিক তথ্য পরিবেশন ও সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে সংবাদপত্রের বড় ভূমিকা রয়েছে। তা থেকেই পাঠকরা উচিত কর্তব্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে পারবেন।
উদ্ভূত জটিল পরিস্থিতিতে সংবাদপত্রের নিয়মিত প্রকাশ ও বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের কাজ করতে যাতে অসুবিধা না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। এর গুরুত্ব সবক্ষেত্রে পৌঁছে দিতে কেন্দ্র সব রাজ্য সরকারের কাছে বার্তাও পাঠিয়েছে। বার্তা গিয়েছে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনের কাছেও। যাতে সংবাদপত্রের নিয়মিত প্রকাশে কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে ওই সার্কুলারে। সময়মতো, সঠিক তথ্য পাঠকদের কাছে পৌঁছনোর লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ বলে জানায় কেন্দ্র।
গত ২৩ মার্চ সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবদের কাছে পাঠানো চিঠিতে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক বলেছে, মানুষের মধ্যে সঠিক সচেতনতা তৈরির জন্য সংবাদমাধ্যমের পুরোদমে কাজ করা জরুরি। একই সঙ্গে জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া এবং সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের ওয়াকিবহাল করতেও সংবাদমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে ভুয়ো ও মিথ্যা তথ্য এবং সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে না। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সংবাদপত্র ও পত্রিকার ছাপাখানা ও তাদের বণ্টন ব্যবস্থাও তথ্য সম্প্রচারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো ও মাধ্যম। তাই সে বিষয়েও যেন কোনওভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি না হয়।
বিভিন্ন সংবাদপত্র যেভাবে ছাপা ও বিতরণ করা হয়, তা আধুনিক ও নিরাপদ। হকারদের জন্য স্যানিটাইজার, মাস্ক ও গ্লাভস দেওয়া হয়েছে। তাই বিভিন্ন আবাসনের কর্তৃপক্ষ, হকার ও পাঠকদের অযথা ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। কোঝিকোরের বেবি মেমোরিয়াল হাসপাতালের ভাইরোলজিস্ট ডাঃ অনুপ কুমার, এইমস-এর ডিরেক্টর ডাঃ রণদীপ গুলেরিয়া, বেলভিউ ক্লিনিকের ডাঃ রাহুল জৈনদের মতে, কাগজ ও সংবাদপত্রের উপর এত দীর্ঘ সময় ভাইরাস থাকে না, যাতে একজন সংক্রমিত হতে পারেন। তাই নিশ্চিন্তে খবরের কাগজ পড়ুন। খবরে থাকুন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.