সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছোট থেকে ছেলে বেশ মেধাবি। পাড়া প্রতিবেশীর কাছে প্রশংসা শুনে বাবা-মায়ের মুখে হাসির ঝিলিক উঠেছে বারবার। বড় হয়ে ছেলে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংকেই পেশা হিসাবে বেছে নেন। বর্তমানে কর্মসূত্রে ইরানেই থাকেন তিনি। এ পর্যন্ত টালিগঞ্জের শ্রীমোহন লেনের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের দিন কাটছিল ভালই। কিন্তু চিন্তা বাড়াল করোনা ভাইরাস। কারণ, সহকর্মীরা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও একাধিক বিমান বাতিল হওয়ায় অনেক চেষ্টার পরেও দেশে ফিরতে পারছেন না বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের ছেলে সায়ন্তন। মারণ চিনা ভাইরাস ছেলের শরীরে থাবা বসাবে না তো, সেই চিন্তা এখন রাতের ঘুম কেড়েছে তাঁদের।
টালিগঞ্জের শ্রীমোহন লেনের বাসিন্দা সায়ন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে ইরানে থাকেন। সেখানেই ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি করেন তিনি। পরিবারের দাবি, সায়ন্তন যে অফিসে চাকরি করেন সেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত অন্তত পঞ্চাশজন সহকর্মী করোনা ভাইরাস আক্রান্ত। এছাড়াও যে আবাসনে থাকেন সায়ন্তন, সেখানেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম নয়। তাই নিজের বাড়ি ফেরার জন্য উতলা হয়ে উঠেছেন সায়ন্তন। তবে কিছুতেই টালিগঞ্জের শ্রীমোহন লেনের বাড়িতে ফিরতে পারছেন না তিনি। সায়ন্তনের বোন বিশ্বরূপা বলেন, “করোনা ভাইরাসের জন্য একের পর এক বিমান বাতিল হয়ে যাচ্ছে। অন্য দেশের যেকোনও বিমানের মাধ্যমে যে দমদমে ফিরবে, তারও টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও ইরানেই থাকতে হচ্ছে দাদাকে। রাজ্য সরকার ওকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করুক, সেটাই চাইব।”
মা শর্মিলা দেবীও ছেলের চিন্তায় খাওয়াদাওয়া করতেও প্রায় ভুলে গিয়েছেন। তিনি বলেন, “তাড়াতাড়ি ছেলেকে এ দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করার দাবিই জানাব। আমরা সাংসদ মালা রায়কে জানিয়েছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।” এদিকে, বুধবার টালিগঞ্জের শ্রীমোহন লেনে সায়ন্তনের বাড়িতে আসেন তৃণমূল সাংসদ মালা রায়। তিনি সায়ন্তনের পরিজনদের সঙ্গে কথাও বলেন। তাঁকে ফেরানোর চেষ্টা করার আশ্বাস দেন সাংসদ। আশ্বাসেও চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না সায়ন্তনের আপনজনেরা। যতদিন না পর্যন্ত ছেলে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসে, ততদিন যেন শান্তি নেই তাঁদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.