গৌতম ব্রহ্ম: সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে সদ্যই। রোগ কি তবে এ রাজ্যেও মহামারি আকার ধারণ করতে চলেছে, এই প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে সকলের মনে। কিন্তু মারণ চিনা ভাইরাসকে রুখতে তৎপর রাজ্য সরকার। তাই দেহ হস্তান্তরিত করার আগে নেওয়া হচ্ছে একগুচ্ছ পদক্ষেপ। সংক্রমণ রুখতে দেহ হস্তান্তরিত করার পর ওই বেসরকারি হাসপাতালেও শুরু হবে জীবাণুমুক্ত করার কাজ।
সম্প্রতি বিলাসপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন দমদমের ওই প্রৌঢ়। তারপর আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেসে চড়ে কলকাতায় ফেরেন তিনি। অনুমান করা হচ্ছে পুণে ফেরত ওই এক্সপ্রেস থেকেই কোনওভাবে প্রৌঢ়ের শরীরে মারণ ভাইরাস সংক্রামিত হয়। তারপর থেকে দু’দফায় হাসপাতালে ভরতি হন তিনি। শেষ কটাদিন করোনা সংক্রমণ নিয়ে সল্টলেকে বেসরকারি হাসপাতালেই কেটেছে তাঁর। সেখানে থাকাকালীনই সোমবার দুপুরে মৃত্যু হয় তাঁর। যেহেতু করোনা ভাইরাস সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল তাই প্রৌঢ়ের মৃত্যুর পর সতর্কতা বেড়েছে আরও কয়েক গুণ। তাই দেহ হ্স্তান্তরের ক্ষেত্রেও নেওয়া হবে একাধিক পদক্ষেপ।
ঠিক কী সেই পদক্ষেপ? বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই প্রৌঢ়ের শরীরে ব্যবহৃত জীবনদায়ী যেকোনও নল খুব সাবধানে খুলে নেওয়া হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে কোনও লালারস তাঁর শরীর থেকে না বেরোয়। এরপর এক শতাংশ হাইপোক্লোরাইড সলিউশন দিয়ে নল ব্যবহারের ফলে দেহে তৈরি হওয়া ছিদ্র বন্ধ করতে হবে। তৃতীয় পর্যায়ে মৃত ওই ব্যক্তির নাক এবং কানের ছিদ্রও বন্ধ করে দেওয়া হবে। একটি জীবাণুনাশক প্লাস্টিক ব্যাগে ঢোকানো হবে দেহ। তারপর আরও একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ দেহ মুড়ে দেওয়া হবে। প্রতিটি প্লাস্টিক ব্যাগের মধ্যে দেওয়া হবে এক শতাংশ হাইপোক্লোরাইড সলিউশন। এছাড়া ওই প্রৌঢ় বেসরকারি হাসপাতালের যে ঘরে ছিলেন সেই ঘরের দেওয়াল, মেঝে, দরজার হাতল জীবাণুমুক্ত করা হবে। সোডিয়াম ক্লোরাইড জীবাণুমুক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হবে।
যাঁরা দেহ সৎকার করবেন, তাঁদেরও বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ওয়াটারপ্রুফ অ্যাপ্রন পরতে হবে প্রায় প্রত্যেককেই। ঘনিষ্ঠরা চাইলে পরিজনদের দেহ দেখতে দেওয়া হবে। কিন্তু কোনওভাবেই স্পর্শ করতে দেওয়া হবে না দেহ। তবে চিতাভস্ম দেওয়া হবে পরিজনদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.