ফাইল ছবি
স্টাফ রিপোর্টার: নতুন ভ্যাকসিন। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতেই পারে, ঘাবড়ানোর কিছু নেই। তাই জেলার টিকাকেন্দ্রগুলিকে পাখি পড়ানোর মতো বুঝিয়েছিলেন টিকা বিশেষজ্ঞরা। সমস্যা হলে কোন পথে মোকাবিলা, কোথায় ভরতি, কীভাবে তথ্য সংগ্রহ – সব বোঝানো হয়েছিল। কিন্তু কথায় ও কাজে যে বিস্তর ফারাক! কিন্তু গত দেড় বছরে করোনা ভ্যাকসিন (Corona vaccine) সংক্রান্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মাত্র ২,২৪৯টি তথ্য জমা পড়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে।
এখানেই গাফিলতির গন্ধ পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের প্রশ্ন, রাজ্যে প্রায় ৩ কোটি মানুষ টিকা নিয়েছেন। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার (Side effects) সংখ্যা এত কম কী করে হয়? হয় সব টিকাকেন্দ্র দৈনিক সব তথ্য জমা দেয় না। অথবা জেলা থেকে ফি-দিনের সব রিপোর্ট জমা পড়ে না। নতুন বলেই করোনা টিকা নেওয়ার পর ৩০ মিনিট গ্রহীতাকে পর্যবেক্ষণে রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। কিন্তু বুধবারের ভারচুয়াল মিটিংয়ে স্বাস্থ্য ভবনের (Health Department) তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ৩০ মিনিট অপেক্ষাই সার। টিকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পর ওই ব্যক্তির কোনও খোঁজ নেওয়া হয় না। ভ্যাকসিন গ্রহীতাকে টিকাকেন্দ্রের নোডাল মেডিক্যাল অফিসারের মোবাইল নম্বর দেওয়া হয় না। বাড়ি ফেরার ৭২ ঘণ্টার পর বা এক সপ্তাহের মধ্যে কোনও টিকা সংক্রান্ত কোনও শারীরিক সমস্যা বা উপসর্গ হলে ওই ব্যক্তিকে কোন হাসপাতালে ভরতি করা হবে, তারও কোনও স্পষ্ট নির্দেশও দেওয়া হয় না। এমনই সব তথ্য উঠে এসেছে।
এ নিয়ে তীব্র চাপানউতোর শুরু হয়েছে স্বাস্থ্যভবনে। বৈঠকে বলা হয়, গত দেড় বছরে মালদহে একটিও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনা নেই। আসানসোলে মাত্র একটি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এমন তথ্য নিয়ে ঘোর সংশয়ে স্বাস্থ্য ভবনের। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি দেশের বাকি অংশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও করোনার টিকা কর্মসূচি শুরু হয়। টিকাকরণের আগে সব জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা। টিকা নেওয়ার পর কী ধরনের সমস্যা হতে পারে, বা সেই সমস্যা হলে কী ব্যবস্থা নিতে হবে, তা কার্যত পাখি পড়ানোর মতো করে বুঝিয়েছেন টিকা বিশেষজ্ঞরা। এক স্বাস্থ্যকর্তাকে বলতে শোনা যায়, “শুধুমাত্র টিকা দিয়েই দায় শেষ, এমনটা ভাবলে ভুগতে হবে। কমিটি কড়া ব্যবস্থা নেবে।” টিকাগ্রহীতার পর্যবেক্ষণ নিয়ে যেমন শৈথিল্যর অভিযোগ রয়েছে। তেমনই টিকা নেওয়ার পর কেউ অসুস্থ হলে তার জন্য নিকটবর্তী বেশ কয়েকটি হাসপাতালে শয্যাও চিহ্নিত নেই।
জেলা থেকে রাজ্য স্বাস্থ্যকর্তারা যে তথ্য হাতে পেয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, গোটা রাজ্যে ২ হাজার ২৪৯টি ভ্যাকসিন সংক্রান্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নথিভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৯৭ শতাংশের উপসর্গ সামান্যই। বাকি ৩ শতাংশ কম এবং ৩ শতাংশের কিছুটা জটিল উপসর্গ। আর এখানেই প্রশ্ন তুলছে স্বাস্থ্য ভবন। অভিযোগ, জেলাভিত্তিক রিপোর্ট অসম্পূর্ণ অথবা সব টিকাকেন্দ্র সব তথ্য জমা দিচ্ছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.