সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। করোনা (Coronavirus) গ্রাফ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আমজনতা থেকে প্রশাসনিক মহল। এই পরিস্থিতিতে কখনও সামনে আসছে রোগীকে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। আবার কখনও উঠছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মৃতদেহ পড়ে থাকার অভিযোগ। আর এই সমস্ত অভিযোগের ফলে কপালে চিন্তার ভাঁজ যে আরও চওড়া হচ্ছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এবার কলকাতার দুই হাসপাতালের বিরুদ্ধে সামনে এল আরও মারাত্মক অভিযোগ। যা শুনে সাধারণ মানুষের অসহায়তা আরও বাড়ছে।
জলপাইগুড়ি সিক্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাইবুনালের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক পরেশচন্দ্র বর্মনের পরিবারের অভিযোগ শুনে হতভম্ব আমজনতা। ঠিক কী অভিযোগ রয়েছে তাঁদের? গত ২৭ জুলাই জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হন বছর বাহাত্তরের এক বিচারক। উপসর্গ দেখে সন্দেহ হওয়ায় করোনা পরীক্ষা করা হয় তাঁর। ২৯ জুলাই পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে আসার পর জানা যায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারক করোনা আক্রান্ত। তাঁকে কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতির পরামর্শ দেয় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। সেদিনই ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বৃদ্ধকে। অভিযোগ, প্রথমে হাসপাতালের তরফে জানানো হয় স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে নির্দেশিকা না আসা পর্যন্ত অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে ভরতি নেওয়া যাবে না। বেশ কিছুক্ষণ অ্যাম্বুল্যান্সে রোগীকে বসিয়ে রাখা হয়। তারপর বলা হয় রোগীকে ভরতি নেওয়ার মতো আইসিইউ-তে বেড ফাঁকা নেই। এভাবে প্রায় তিন-সাড়ে তিন ঘণ্টা কেটে যায়। আর এদিকে, অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের শরীর আরও খারাপ হতে থাকে। বারবার অনুরোধের পরেও ভরতি নিয়ে গড়িমসি চলতে থাকে বলেও অভিযোগ। ততক্ষণে অচেতন হয়ে পড়েন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক।
তারপর ওই অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা জানান তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এরপর পরিবারের তরফে দেহ ওই হাসপাতালের মর্গে রাখার অনুরোধ করা হয়। তবে তাতেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে চূড়ান্ত অসহযোগিতা করা হয় বলে অভিযোগ। কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে মধ্যরাতে আবারও ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য ওই হাসপাতালে দৌড়ে যান মৃতের ছেলে। অভিযোগ, মৃত অবস্থাতেই কেপিসি হাসপাতালে অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে আসা হয়েছিল বলেই উল্লেখ করা হয় কাগজপত্রে। বাধ্য হয়ে ডেথ সার্টিফিকেট পাওয়ার আশায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধিতা করেননি বলেই দাবি মৃতের ছেলের। ডেথ সার্টিফিকেট পাওয়ার পরই এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে যান তিনি। অবশেষে সেখানেই দেহ মর্গে রাখেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.