কৃষ্ণকুমার দাস: শহরে কোভিড সংক্রমণ রুখতে হোম আইসোলেশনের নিয়মভঙ্গকারী করোনা রোগীর বাড়িতে কার্যত শোকজ চিঠি পাঠাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। শুধু তাই নয়, পরোক্ষে করোনা সংক্রমণের দায়ে অভিযুক্ত রোগীর হোম আইসোলেশনে থাকার বৈধতাও সোমবার বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভার কোভিট মোকাবিলা কমিটি। কারণ, মহানগরে অধিকাংশ পাকা বাড়ি ও বহুতলে আইসোলেশনে থাকা রোগীদের অন্তত ৫০ শতাংশ আইসিএমআর গাইড লাইনের শর্ত মানছেন না।
নিভৃতবাসে সম্পূর্ণ ঘরবন্দি থাকার পরিবর্তে রোগী বা তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বাজার-দোকানের মতো সামাজিক ক্ষেত্রে মেলামেশা করছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে পুরসভা। পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের উপস্থিতিতে শহরের সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সংক্রমণের মূল কারণ হিসাবে হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের চরম গাফিলতি ও নিয়মভঙ্গ করাকেই চিহ্নিত করেন চিকিৎসক ও পুরকর্তারা। এদিন পুরসভার কাছে কিছুটা স্বস্তির খবর, কলকাতা পুরসভা এলাকায় কনটেনমেন্ট জোনের যে সংখ্যা নবান্ন প্রকাশ করেছে সেখানে এক ধাক্কায় ৩৯ থেকে ২৩টিতে নেমে এসেছে।
কোভিড মোকাবিলা কমিটির বৈঠক শেষে পুরসভার স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রশাসক অতীন ঘোষ এদিন জানান, “হোম আইসোলেশনে থাকা ৫০ শতাংশই ঘরে থেকে চিকিৎসার জন আইসিএমআর-এর শর্ত মানছেন না। সঠিক ঠিকানা, চিকিৎসকের নাম ও ‘কেয়ার গিভার’ ফর্ম না দেওয়ায় তাঁদের খুঁজে শনাক্তও করা যাচ্ছে না। তাই নিয়মভঙ্গকারীদের পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা খুঁজে বার করে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেবে যে হোমআইসোলেশনে থাকার বৈধতা বাতিল করা হল। শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী তাঁদের সেফ হোম বা হাসপাতালে ভরতিরও ব্যবস্থা করবে পুরসভা।” যাঁরা হোম আইসোলশেনে থাকবেন তাঁদের কী কী শর্ত মানতে হবে তার গাইডলাইনও পুরসভা ছাপানো ফর্মে বাড়ি বাড়ি পাঠাবে। প্রতিটি রোগীর বাড়িতে ফোনে নজরদারি চালাবে ওয়ার্ড ভিত্তিক ‘ট্রেকিং সেল’, জানান অতীনবাবু।
রাজ্য সরকার এদিন কলকাতা পুরসভা এলাকার কনটেন্টমেন্ট জোনের যে নতুন তালিকা প্রকাশ করেছে সেখানে এক ধাক্কায় ৩৯ থেকে নেমে ২৩ হয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার যে ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩টি জোন ছিল সেখানে মাত্র পাঁচটিতে চলে এসেছে। তবে উত্তর কলকাতার তিন নম্বর বরোতে সাতটি কনটেনমেন্ট জোন ঘোষণা করেছেন রাজ্য সরকার। দক্ষিণের ৬৯ ওয়ার্ডে বালিগঞ্জের ২৯বি হাজরা রোড ও ৪ এ রেনি পার্কের দু’টি নামী বহুতল এবং ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের আলিপুর এলাকায় বর্ধমান রোডের নামী আবাসন কমপ্লেক্সকে কনটেনমেন্ট জোন ঘোষণা করেছে নবান্ন। তবে উত্তরের ৩১, ৩৩, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় এখনও করোনার দাপট চলায় ধারাবাহিকভাবে কনটেনমেন্ট জোন থাকায় উদ্বিগ্ন পুরসভা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.