অর্ণব আইচ: করোনাকালে (Coronavirus) ফের অমানবিকতার ছবি শহর কলকাতায়। বেহালার (Behala) সখের বাজার এলাকায় করোনায় মৃত এক ব্যক্তির দেহ পড়ে রইল প্রায় ২০ ঘণ্টা। কোভিডবিধি মেনে মৃতদেহ উদ্ধারে পুলিশ এবং পুরসভা একে অপরের দিকে দায় ঠেলেছে বলে অভিযোগ। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য এলাকায়। করোনায় মৃতের দেহ এভাবে পড়ে থাকায় সংক্রমণ ছড়ানোর ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত বাসিন্দারা। বেলা প্রায় সাড়ে ১২টা নাগাদ দেহ উদ্ধার করে সৎকারের ব্যবস্থা করা হয় বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত দিন পাঁচেক আগে। সখের বাজার এলাকার ভুবনডাঙা রোডে বাড়ি বছর পঞ্চাশের পর্যটন ব্যবসায়ীর। তিনি ৫ দিন আগে হার্নিয়া অপারেশনের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শমতো হাসপাতালে যান। সেখানে অপারেশনের আগে তাঁর কোভিড (COVID-19) পরীক্ষা করানো হয়। তাতে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ওই ব্যবসায়ী বাড়িতেই আইসোলেশনে ছিলেন।বৃদ্ধ বাবা ছাড়া পরিবারে আর কেউ নেই তাঁর। রবিবার দুপুরে অবস্থার অবনতি হওয়ার পর বাবাও তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি। ফলে বাড়িতেই দুপুরে ৩টে নাগাদ ওই পর্যটন ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়।
খবর পাঠানো হয় চিকিৎসককে। তিনি নিয়ম মেনে ডেথ সার্টিফিকেট দেন। এরপর আত্মীয়দের সাহায্য নিয়ে মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য বেহালা থানায় খবর পাঠান মৃত ব্যবসায়ীর বাবা। অভিযোগ, পুলিশ একটি ফোন নম্বর দিয়ে পুরসভার সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ করতে বলে। সেই নম্বরে ফোন করে কোনও সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ বৃদ্ধের। মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা কে করবে? এ নিয়ে পুলিশ এবং পুরসভা একে অন্যের ঘাড়ে দায় ঠেলছে। প্রায় ২০ ঘণ্টা এভাবেই বাড়িতে পড়ে ছিল করোনা রোগীর দেহ। পরে পুরসভার উদ্যোগে দেহটি উদ্ধার করা হয় বলে খবর। এখান থেকে দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে, এই ভয়ে কাঁটা প্রতিবেশীরা। সখের বাজারের এই ঘটনাই প্রথম নয়। আগেও বেশ কয়েকবার শহর কলকাতা দেখেছে এমন অমানবিক চিত্র। কোভিডবিধি মেনে সৎকারে উদ্যোগ না নেওয়ায় দীর্ঘক্ষণ পড়েই রয়েছে মৃতদেহ, বেড়েছে সংক্রমণের ঝুঁকি। সেই তালিকাই দীর্ঘ হল বেহালার এই ঘটনায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.