কলহার মুখোপাধ্যায়: করোনা আবহে ক্রমেই বদলে যাচ্ছে শহর কলকাতার ছবিটা। একটা সময় যেখানে ক্রিকেটপ্রেমীদের শব্দব্রহ্মে গমগম করত ইডেন গার্ডেন্স, ক্রিকেটের সেই নন্দনকানন আজ পরিণত হয়েছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। ঠিক একইভাবে নিকো পার্ক (Nicco Park) বদলে গেল সেফ হাউসে।
৯০-এর দশকে তৈরি অ্যামিউসমেন্ট পার্কটি বাচ্চাদের অন্যতম পছন্দের জায়গা। গোটা বছরই ভিড়ে ঠাসা থাকে এই পার্ক। জয়রাইডে কচিকাঁচাদের কোলাহলেই ভরপুর থাকে নিকো পার্ক। কিন্তু গত মার্চ থেকে একেবারে বদলে গিয়েছে চেহারাটা। মারণ করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) মোকাবিলায় দেশজুড়ে জারি হয় লকডাউন। তখন থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয় পার্ক। বিপুল অঙ্কের ক্ষতির মুখে পড়ে পার্ক কর্তৃপক্ষ। তবে এমন সংকটজনক পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় তারা। কোভিড মোকাবিলার জন্য পার্কের রয়্যাল কোর্টইয়ার্ড হলটি প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যেটি আগে জন্মদিন বা বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হত। সেটিকে বর্তমানে সেফ হাউসে পরিণত করেছে বিধাননগর পুরনিগম।
পাঁচদিন আগেই ৬০টি বেড নিয়ে এই পরিষেবা শুরু করেছেন পুরনিগম। ইতিমধ্যেই সেখানে ১০ জনের বেশি মানুষ রয়েছেন। বিধানগর এলাকায় যে সমস্ত পরিবারগুলি ছোট ঘরে বসবাস করে, যাদের সামান্য উপসর্গ দেখা দিলে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকাটা অসম্ভব, এমন পরিবারের সদস্যদেরই এখানে রাখা হচ্ছে। বিকাশ ভবনের উলটোদিকে একটি কোভিড টেস্টিং সেন্টার তৈরি করেছে বিধাননগর পুরনিগম। যেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। সেখানেই এই সেফ হাউসে থাকা মানুষদের চেক আপ করা হচ্ছে। অসুস্থ হলে হাসপাতালে ভরতি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। আর সুস্থ হলে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুরনিগমের মেয়র পারিষদ প্রণয় কুমার রায় জানিয়েছেন, আপাতত ১৪ দিন এঁদের সেফ হাউসে রাখা হবে। তাঁদের সমস্ত খরচ বহন করবে পুরনিগমই। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হবে।
উল্লেখ্য, ভিনরাজ্য থেকে যখন পরিযায়ী শ্রমিকরা এ রাজ্যে ফিরেছিলেন, তখনই রাজ্য সরকারের সুবিধার্থে ৮০০০ বর্গফুটের ওই হলটি ছেড়ে দিয়েছিল নিকো পার্ক কর্তৃপক্ষ। তখনই তা পরিণত হয়েছিল কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। এবার সেটিই বদলে গিয়েছে সেফ হাউসে। করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের পাশে দাঁড়াতে পারায় সন্তুষ্ট কর্তৃপক্ষও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.