অর্ণব আইচ: মহাকরণে (Writers Building) সার্ভিস রাইফেল থেকে গুলি ছিটকে পুলিশ বিশ্বজিৎ কারকের মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও রহস্যের জট পুরোপুরি খোলেনি। আত্মহত্যা নাকি অসাবধানতাবশত এমন দুর্ঘটনা ঘটে গেল? এমনই নানা প্রশ্নের ভিড়। তবে পরতে পরতে রহস্যে মোড়া এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের অনুমান, ছোট্ট সন্তানকে দেখতে বাড়ি যাওয়ার ছুটি না পেয়ে এমন কাণ্ড ঘটিয়ে বসেছেন বিশ্বজিৎ। যদিও এখনই এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারছেন না তদন্তকারীরা।
বিশ্বজিৎ কারকের আদি বাড়ি মেদিনীপুরে। সেখানেই ছোট থেকে বেড়ে ওঠা। কিন্তু চাকরি পাওয়ার পর থেকেই যেন বদলে গেল বিশ্বজিৎ কারকের জীবন। পরিজনদের ছেড়ে চলে আসতে হয়েছিল শহর কলকাতায়। সেখানেই জীবন সাজানোর চেষ্টা করছিলেন। লেকটাউনে ফ্ল্যাটও নিয়েছিলেন। তবে জীবনে বাঁচার জন্য একটা ভাল চাকরি, ফ্ল্যাটই কী সব? জীবন দিয়ে বোধহয় সে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেলেন বিশ্বজিৎ কারক। তিনি বোঝালেন শুধু বাড়ি, চাকরিই নয়। জীবনে বাঁচার জন্য পরিজনরা পাশে থাকা ভীষণভাবে প্রয়োজন।
লকডাউনে (Lockdown) বাড়ি যেতে পারেনি। মন ছটফট করছিল তাঁর। তাই আনলক পর্বে চেয়েছিলেন দিনচারেকের ছুটি। মেদিনীপুরে গিয়ে ছোট্ট সন্তানকে বুকে জড়িয়ে দিনকয়েক নিজের মতো করে বাঁচতে চেয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। কিন্তু নাহ, তাঁর দাবি মিটল না। বারবার আবেদন করেছেন। অনুরোধ করেছেন দিনচারেকের জন্য ছুটি দেওয়ার। কিন্তু ছুটি পাননি বিশ্বজিৎ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ছুটি না পাওয়ায় তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তাই শুক্রবার দুপুরে অঘটন ঘটিয়েই ফেলেন।
এদিন দুপুরে ঘড়ির কাঁটায় তখন সবে তিনটে হবে। করোনা বিধি মেনে অল্প সংখ্যক কর্মী কাজ করে চলেছেন মহাকরণে। আচমকাই গুলির শব্দে হতচকিত হয়ে পড়েন সকলে। তারপরই শোনা যায় প্রেস কর্ণারের কাছে গুলি চলেছে। প্রাণহানি হয়েছে পুলিশকর্মীর। সকলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন রক্তে ভেসে যাচ্ছে বিশ্বজিতের শরীর। হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ তাঁর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। নিজেকে শেষ করার সিদ্ধান্ত কী সত্যিই নিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ নাকি অসাবধানতায় এমন মর্মান্তিক কাণ্ড ঘটে গেল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.