সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্ণব আইচ: বরাবরই ইংরাজি বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উৎসবে হুল্লোড়ে মাততে বাঙালির পছন্দের সঙ্গিনী বিদেশি বেলি ডান্সার। আর সেই বেলি ডান্সার যদি বেলারুশ, কাজাখিস্তান, রাশিয়া থেকে কলকাতায় আসেন তাহলে তো আর কথাই নেই। তেমনই এবছরও অনুষ্ঠান মাতাতে বিদেশি বেলি ডান্সারদের নিয়ে আসছে শহরতলির বেশ কিছু ক্লাব। কোন ক্লাবে কে আসছে তা জানতে বন্ধুবান্ধবদের কাছে ও অনলাইনের বিভিন্ন সাইট ও অ্যাপে খোঁজ শুরু করেছে পার্টিপ্রেমী মানুষ। পার্ক স্ট্রিট ছাড়িয়ে বর্ষবরণে বেলেল্লাপনা ছড়িয়ে পড়ছে শহরতলিতে। তবে মদ্যপানের পর বেলেল্লাপনা যাতে শুরু না হয়, তার জন্য স্ট্র্যাটেজি তৈরি সব কমিশনারেট ও জেলা পুলিশের।
কলকাতার সাহেবপাড়া রয়েছে তার নিজের জৌলুস নিয়ে। বর্ষবরণের রাতে পার্ক স্ট্রিট ও তার আশপাশে নামবেই মানুষের ঢল। কিন্তু আশপাশের জেলা ও কমিশনারেটের মানুষও যে ৩১ ডিসেম্বর রাতে মেতে উঠবেন নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আনন্দে। তাঁদের মধ্যে হয়তো সামান্য একটি অংশ যাবে সাহেবপাড়ার দিকে। আর বাকিরা আনন্দে মাতবেন নিজেদের জায়গায়। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, এখন বর্ষবরণের আনন্দের মূল উপকরণ হচ্ছে দামি মদ। আর তার সঙ্গে রয়েছে বাজি। মদ্যপান নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। সমস্যা মদ্যপান করার পর বেলেল্লাপনা করলে। আতসবাজি ফাটানোর ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। রাত বারোটার পর নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটলে শুরু হয় সমস্যা। আবার নতুন সমস্যা তৈরি হয়েছে মাদক নিয়ে। বহু পার্টিতেই মদের সঙ্গে সঙ্গে ঢুকে যাচ্ছে মারাত্মক মাদক। মিলেছে তার প্রমাণও। আর মদের সঙ্গে মাদক নিলে বেলেল্লাপনা যে কয়েক গুণ বেড়ে যাবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থেকে বারুইপুর অথবা উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত, বারাকপুর কিংবা হাওড়ার দূরত্ব কলকাতা থেকে এমন কিছু নয়। পানশালার অভাবও নেই। হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু জায়গায় রয়েছে রিসর্ট ও ক্লাব। সেখানে ভিড় করেন বাইরে থেকে আসা বহু মানুষ। ৩১-এর রাতে রাস্তায় নামবে প্রত্যেকটি জেলা ও কমিশনারেটের পুলিশ। পানশালাগুলি যাতে নির্ধারিত সময়ের পর খোলা না থাকে। তার সঙ্গে জোর দেওয়া হচ্ছে শহরতলিতে মাদক পাচারের উপর। সল্টলেক, রাজারহাট, বাগুইআটি, দমদম, লেকটাউনের পানশালা ও প্রাইভেট পার্টির উপরও পুলিশ বিশেষ নজর দিচ্ছে। বিধাননগর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তা জানান, এই বছর বর্ষবরণের জন্য বেশ কয়েকটি হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েট ও হল ভাড়া নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভাড়া নিতে গেলে পুলিশের অনুমতি নিতে হচ্ছে। অনুমতি দেওয়ার সময় সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে, যাতে নির্ধারিত সময়ের পর পার্টি না হয়। মদ্যপানের পর রাস্তায় বেরিয়ে যাতে কেউ গোলমাল না করে, তার জন্য পুলিশের বিশেষ টিম রাস্তায় থাকবে। এ ছাড়াও মদ্যপান করে বেপরোয়া গতিতে যাতে বাইক না চলে অথবা ফাঁকা রাস্তায় যাতে বাইকের রেস না হয়, তার জন্য প্রত্যেকটি কমিশনারেট ও জেলার পুলিশ গার্ডরেল দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করছে বিভিন্ন জায়গায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.