ছবিটি প্রতীকী
অর্ণব আইচ: কলকাতার (Kolkata) হোটেলে শিলিগুড়ির তিন বাসিন্দার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়। পাওনাদারদের হাত থেকে বাঁচতে প্রায় দেড়মাস আগে শিলিগুড়ির বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিল মৃতেরা। জানা গিয়েছে, মৃত সুনীত বনসলও বিবাহিত। তাঁর দুই সন্তানও রয়েছে। কোথায় সুনীতের স্ত্রী ও সন্তান? তাঁদের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টায় পুলিশ।
সোমবার সাড়া মেলেনি পরিবারটির। তাতেই খটকা লেগেছিল মধ্য কলকাতার নিউ মার্কেটের হোটেলের ম্যানেজারের। মঙ্গলবার সকালে ফের সাড়া না পেয়ে শেষ পর্যন্ত দরজা খুলে চারতলার ঘরের ভিতর ঢুকতেই দেখেন, বিছানার উপর পড়ে আছে একই পরিবারের তিনজনের নিথর দেহ। এরপরই তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, শিলিগুড়িতে চটের ব্যাগ তৈরির কারখানা ও ব্যবসা রয়েছে ওই পরিবারের। চায়ের ব্যবসাতেও ব্যাগ সরবরাহ করতেন তাঁরা। লকডাউনের সময় তাঁদের ব্যবসায় ক্ষতি হয়। ফলে প্রচুর ধার দেনা হয়ে গিয়েছিল। পাওনাদাররা নিয়মিত টাকার জন্য চাপ দিত। সেই কারণে পাওনাদারদের হাত থেকে বাঁচতে দেড় মাস আগে বাড়ি ছাড়ে ওই পরিবার। সঙ্গে ছিলেন বৃদ্ধ দম্পতির ছেলে সুনীতের স্ত্রী ও দুই সন্তান।
সুনীত নিজেও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। সুনীতের ছেলেও মানসিক সমস্যায় ভুগছিল। যদিও সুনীতের স্ত্রী ও সন্তানরা এখন কোথায়, পুলিশ তা জানতে পারেনি। তবে জানা যাচ্ছে, কয়েকজন আত্মীয়ের বাড়িতে থেকেছিলেন তাঁরা। কাউকে বলেছিলেন, চিকিৎসার জন্য কলকাতা, আবার কাউকে বলেছিলেন বেঙ্গালুরু যাচ্ছেন। পুলিশের ধারণা, পরিকল্পনা করেই তাঁরা কলকাতায় এসে আত্মঘাতী হন। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের মোবাইলের কললিস্ট ধরে আত্মীয়দের সঙ্গে পুলিশ কথা বলছে। কলকাতায় তাঁদের কোনও আত্মীয় ছিলেন কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে সুইসাইড নোটে মৃতেরা জানিয়েছিলেন, লকডাউনের পর থেকে তাঁদের ব্যবসার অবস্থা খারাপ। বাজারে প্রচুর ঋণ। সেই কারণেই তাঁরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। জানা গিয়েছে, ওই নোটে তাঁরা লিখেছেন, যাতে সরকারি অর্থে তাঁদের সৎকার করা হয়। যদিও পুলিশের তরফে ইতিমধ্যেই বনসল পরিবারের আত্মীয়দের খোঁজ শুরু করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.