অর্ণব আইচ: পুজোর মণ্ডপে ইভজিটিং বা শ্লীলতাহানি করে কেউ পালিয়ে যাবে? সেটি আর হচ্ছে না। যদি পালিয়েও যায়, তার চেহারা ধরা পড়বে সিসিটিভিতে। আর সেই ফুটেজ ধরেই পুলিশের হাতে ধরা পড়বে রোমিও। ফলে ষষ্ঠীতে কেউ মণ্ডপ বা তার আশপাশে কোনও দুষ্কর্ম করলে দ্বাদশীতেও সে ধরা পড়তে পারে। চতুর্থী থেকেই পুলিশ নেমেছে শহরে৷ পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার নিজেই মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে নির্দেশ দিচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকদের।
আজ ষষ্ঠীর সন্ধ্যা থেকেই শহরে নামছে মানুষের ঢল। কোনও দর্শনার্থীর যাতে একটুও অসুবিধা না হয়, তার জন্য প্রত্যেকটি বড় মণ্ডপে রয়েছেন লালবাজারের পুলিশকর্তারা। দর্শনার্থীরা যাতে বিশেষ একটি গেট দিয়ে মণ্ডপে ঢুকে অন্য গেট দিয়ে বের হন, সেই বিষয়ে পুলিশ গুরুত্ব দিচ্ছে। অনেকেই প্রতিমা বা মণ্ডপসজ্জাকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে সেলফি তোলেন। কিন্তু মোবাইলে সেলফি বা ছবি তোলার জন্য যাতে অন্য দর্শনার্থীদের অসুবিধা না হয়, সেই বিষয়টি পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে দেখছেন পুজো কমিটিগুলির স্বেচ্ছাসেবকরাও। পঞ্চমীর রাতেও শহরে কোনও দর্শনার্থীর ঠাকুর দেখতে অসুবিধা হয়নি। রাত পর্যন্ত গাড়ির চাপ ছিল শহরের বহু রাস্তায়। কিন্তু বড় ধরনের যানজট হয়নি রাস্তায়। গভীর রাত পর্যন্ত ট্রাফিক সামলেছে পুলিশ। তাই শহরবাসী স্যালুট জানিয়েছে কলকাতা পুলিশকে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বহু মানুষ।
[পুজোয় নাশকতা রুখতে ডিউটিতে রোজা, ভেনাসরা]
পুজোর শহরে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য আয়ত্তে আনতে ও নাশকতা রুখতে পুলিশের বড় ভরসা সিসিটিভি। কলকাতার প্রায় প্রত্যেকটি মণ্ডপই মুড়ে ফেলা হয়েছে সিসিটিভির নিরাপত্তার জালে। পুজোর আগে থেকেই কমিটিগুলিকে লালবাজারের কর্তারা অনুরোধ করেছিলেন, তাঁরা যেন মণ্ডপের ভিতর ও তার আশপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভি বসান।
[পুজোয় শহরে নাগরদোলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত ১]
সেগুলি যেন মনিটরিংয়েরও ব্যবস্থা থাকে। এ ছাড়াও ফুটেজগুলি সংরক্ষণ করতেও বলা হয়। পুলিশকর্তাদের অনুরোধ মেনে শহরের বেশিরভাগ পুজো কমিটিই তাদের মণ্ডপে বসিয়েছে সিসিটিভি। সংরক্ষণ করা হচ্ছে পুজোর সময়ে অন্তত দশদিনের সিসিটিভির ফুটেজ। পুলিশের মতে, যে কোনও দুষ্কৃতীর কার্যকলাপ ধরা পড়বে সিসিটিভিতে। সিসিটিভির ক্যামেরা দেখলে রোমিওরাও ভিড়ের মধ্যে ইভটিজিং বা শ্লীলতাহানি করার সাহস পাবে না। এ ছাড়াও নাশকতা রুখতেও কাজে লাগানো হচ্ছে সিসিটিভিকে। পুজোয় শহরের আকাশে উড়ছে কলকাতা পুলিশের আকাশযান দুর্দান্ত। এই ড্রোনের সাহায্যেও ভিড়ের উপর নজর রাখছে পুলিশ। এদিন সকালেই সুন্দরবনের বেশ কয়েকজন বালক-বালিকাকে শহরে ঠাকুর দেখাতে নিয়ে আসে পুলিশ। তাদের শহরের বিভিন্ন দ্রষ্টব্য ঘুরিয়ে দেখানো হচ্ছে। নিরাপত্তার খাতিরে গাড়ির মালিক বা ভাড়া গাড়ির চালককে শনাক্ত করার জন্য পুলিশের অনুরোধ, তাঁরা যেন একটি কাগজে তাঁদের নাম ও মোবাইল নম্বর লিখে গাড়ির সামনে ও পিছনের কাচে আটকে রেখে যান৷
ছবি: প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.