দীপঙ্কর মণ্ডল: একসঙ্গে তিনটি মিছিল। একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা। অথচ, মুখের কথায় নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না ভিড়। এই পরিস্থিতিতে গতকাল যাদবপুরে পড়ুয়াদের উপর লাঠিচার্জ করে কলকাতা পুলিশ। একপ্রকার নির্বিচারেই মারধর করা হয় পড়ুয়াদের। যা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু এবং দুঃখজনক। এতটাই, যে ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করছেন খোদ পুলিশ আধিকারিকও। শুধু দুঃখপ্রকাশ নয়, রীতিমতো পড়ুয়াদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন যাদবপুর বিভাগের ডেপুটি কমিশনার সুদীপ সরকার। দক্ষিণ কলকাতার আটটি থানা এলাকা নিয়ে এই বিভাগ। সোমবার রাতে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে গিয়ে একাধিকবার লাঠিচার্জের ঘটনায় ক্ষমা চান এই আইপিএস অফিসার।
একজন আইপিএস অফিসারের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়াকে অবশ্য মেনে নিতে পারছেননা কলকাতা পুলিশের নিচুতলার কর্মীরা। ঘটনা হল, সোমবার সিপিএম, বিজেপি এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের একটি অংশ সুলেখা মোড়ের কাছে মিছিল নিয়ে হাজির হয়। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর পুলিশ মাইকে সবাইকে সরে যেতে বলে। বিজেপি সরে গেলেও যাদবপুরের পড়ুয়ারা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলো। স্বাভাবিকভাবে যাদবপুর-গড়িয়া রুটের যাত্রীরা ছিল বিরক্ত। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চালিয়েছিল একথা সত্যি। নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের বক্তব্য, এটাই নিয়ম। যেকোনো বিক্ষোভে প্রথমে সরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তা নাহলে যানচলাচল ঠিক করতে লাঠিচার্জ করতেই হয়। যাদবপুরে যা হল তা এক কথায় নজিরবিহীন। এর আগেও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভকারীদের সরাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। কিন্তু কোথাও পুলিশ কর্তাকে গিয়ে ক্ষমা চাইতে হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ কর্মীরা জানিয়েছেন, “ক্ষমা চাওয়ার ঘটনায় ফোর্সের মনোবল ধাক্কা খেলো। এখন থেকে আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে দু’বার ভাবতে হবে।” উল্লেখ্য, জেএনইউ কাণ্ডের প্রতিবাদে যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীরা মিছিল করছিলেন। সেই মিছিলে লাঠিচার্জের প্রথম নিন্দা করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে তিনি বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন বলে লেখেন। তারপরেই আইপিএস কর্তা গিয়ে ক্ষমা চেয়ে আসেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.