গৌতম ব্রহ্ম: চার মাসে চারবার। এগড়া, বজবজ, মালদহের পর উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর। একের পর এক বেআইনি বাজি কারখানায় প্রাণঘাতী বিস্ফোরণ বুঝিয়ে দিল রাজ্যে সবুজ বাজির ক্লাস্টার তৈরি করার সিদ্ধান্ত কতটা সময়োপযোগী ও জরুরি।
১৬ মে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় বেআইনি বাজি কারখানার বিস্ফোরণে ৯ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সমস্ত বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধ করে সবুজ বাজি তৈরির ক্লাস্টার গড়ার নির্দেশ দেন। স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দুর্গাপুজো, দীপাবলি, ছট ও বড়দিন ছাড়া বাজি ফাটানো যাবে না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পাঁচটি ক্লাস্টারের জায়গাও চূড়ান্ত হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে ২১ একর জায়গার উপর আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হবে ক্লাস্টার। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় ১২ একর জমির উপর ২.২৮ কোটি ব্যয়ে হবে ক্লাস্টার। ৫৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে, ৮৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে, ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটেও ক্লাস্টার তৈরির রূপরেখা চূড়ান্ত। ১ লক্ষের বেশি মানুষ এই সব ক্লাস্টারে কাজ পাবেন। সম্প্রতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ দপ্তরের অনুষ্ঠানে এমনটাই জানান মুখ্যমন্ত্রী। ফায়ার ক্র্যাকার যে ফাটানো বা বানানো যাবে না, তাও মনে করিয়ে দেন। এই আবহে দত্তপুকুরের ঘটনা ফের বুঝিয়ে দিল, সরকারি নিয়ন্ত্রণে বাজির ক্লাস্টার তৈরির প্রয়োজনীয়তা কতখানি।
এগড়ার ঘটনার পাঁচদিনের মাথায় ২১ মে বিস্ফোরণ হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজে। তিনজন মারা যান। ২৩ মে মালদহের ইংরেজবাজারে বিস্ফোরণে দু’জন মারা যান। মালদহের ঘটনার আগেই বেআইনি বাজি কারখানা ধরার অভিযান শুরু হয়। শুধু বজবজের একটি বাজি কারখানা থেকে উদ্ধার হয় ২০ হাজার কেজি বাজি। তারপরই সরকারের তরফে গাইডলাইন প্রকাশ করে জানিয়ে দেওয়া হয়, বাংলায় আর পটকা ফাটানো যাবে না। কেবল গ্রিন ক্র্যাকার ফাটানো যাবে। দীপাবলি, ছটে ২ ঘণ্টা করে গ্রিন ক্র্যাকার ফাটানোর অনুমতি থাকবে। দীপাবলীতে রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত, ছটের দিন সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত এবং বড়দিনে রাত ১১টা ৫৫ থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মাত্র ৩৫ মিনিট গ্রিন ক্র্যাকার ফাটানো যাবে। আর এই উৎসবগুলির বাইরে অন্য কোনও উৎসবে যদি গ্রিন বাজি ফাটাতে হয় তবে জেলাশাসক, সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপারের থেকে অনুমতি নিতে হবে। সেক্ষেত্রেও সময়সীমা ২ ঘণ্টা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.