বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: দ্রুত কমছে বিজেপির (BJP) জনসমর্থন। সিপিএমের (CPM)সঙ্গে জোট অটুট রেখে লড়াই জারি রাখলে বিরোধীদের জায়গা দখল করা সম্ভব। পর্যালোচনা বৈঠক শুরুর ঠিক আগের দিন সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানের (Abdul Mannan)। চিঠিতে রাজ্যের কয়েকজন নেতার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। মঙ্গলবার থেকে পাঁচ রাজ্যের ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করছে কংগ্রেস (Congress)। নেতৃত্বে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চৌহান। তার ঠিক আগেরদিন এ রাজ্যের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা মান্নানের এই চিঠি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের। তামিলনাড়ুতে ক্ষমতায় ফিরলেও এম কে স্ট্যালিনের ডিএমকের হাত ধরেই তা সম্ভব হয়। অসম ও কেরলে বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়েছে কংগ্রেস। স্বাধীনতার পর এই প্রথম কোনও দল পরপর দু’বার ক্ষমতার মসনদ দখল করল। সিপিএম নেতৃত্বাধীন LDF বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে। কেরলের ট্র্যাডিশন অনুযায়ী, এবার কংগ্রেসের ক্ষমতায় আসার কথা। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। আর বঙ্গে সিপিএম ও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (ISF) হাত ধরে ‘হাত’-এর লড়াই করে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। খালি হাতে ফিরতে হয়েছে উভয় দলকেই। স্বাধীনতার পর এই প্রথম।
কিন্তু কেন এমন ফল? তার পর্যালোচনা করার নির্দেশ দেন সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। অশোক চৌহানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যর কমিটিও গড়ে দেন। গত সপ্তাহেই এই পর্যালোচনা বৈঠক শুরুর কথা থাকলেও রাজ্যে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়। কমিটির সদস্যরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ছাড়াও আলাদা করে কথা বলবেন আবদুল মান্নান, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য-সহ শাখা সংগঠনের শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে।
ইতিমধ্যেই ফলাফল নিয়ে একদফা পর্যালোচনা করে ফেলেছে জোটের বড় শরিক সিপিএম। সেখানে আইএসএফ এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ওঠে। ভবিষ্যতে জোটধর্ম বজায় রেখে পথ চলা হবে কি না, সেই প্রশ্নের সমাধান করেনি আলিমুদ্দিন। যদিও আগ বাড়িয়ে পার্টি জোট ভাঙতে যাবে না বলে জানান সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। এবার জোট বজায় রেখেই পথ চলার পক্ষে সওয়াল করে সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি দিলেন মান্নান। কেন জোট বজায় রাখার পক্ষে তাঁর সওয়াল, চিঠিতে সেই ব্যাখ্যাও সংক্ষেপে দিয়েছেন প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, কৌশলগত ত্রুটি ও কয়েকজন নেতার আচরণ মানুষ ভালভাবে নেয়নি। তবে সেই নেতা কারা, তার উল্লেখ অবশ্য মান্নান করেননি।
চিঠিতে তিনি আরও লেখেন, ভোটে ভরাডুবি হলেও হতাশার কিছু নেই। ভরাডুবির দুঃখে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলে হতাশা আরও বাড়বে। তিনি মনে করেন, অনেক প্রত্যাশায় মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল। সেই মোহ ভঙ্গ হয়েছে। বিজেপির জনসমর্থন কমতে শুরু করেছে। অদূর ভবিষ্যতে আরও কমবে। সেই বিরোধী পরিসর দখল করা সম্ভব তখনই যদি জোট অক্ষত রেখে প্রতিদিন মানুষের দাবিদাওয়া নিয়ে রাস্তায় থাকা যায়। সামনেই পুরভোট। তার জন্য এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়ার পরামর্শ দেন মান্নান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.