Advertisement
Advertisement

মার্কিন সেনার জেনারেল পরিচয়ে প্রায় ১৯ লক্ষ টাকার প্রতারণা বাগুইআটিতে

ফেসবুকে বন্ধুত্ব পাতিয়ে প্রতারণা৷

Con man poses as US army General, dupes Baguiati man
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 9, 2018 4:03 pm
  • Updated:June 9, 2018 4:03 pm  

স্টাফ রিপোর্টার, বিধাননগর: নিজেরাই বিক্রেতা। নিজেরাই আবার ক্রেতা। সিনেমার মতো এই সাজানো ছকে ফেলে বাগুইআটির এক ব্যক্তির থেকে ১৮ লক্ষ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়েছে এক প্রতারণা চক্র৷ জীবনদায়ী ওষুধ তৈরির জন্য মার্কিন সংস্থার সঙ্গে এক বিশেষ বীজের ব্যবসার টোপ দিয়ে তাঁকে ফাঁদে ফেলে এক মহিলা ও তিন বিদেশি। মার্কিন সেনাবাহিনীর জেনারেল পরিচয় দিয়ে ফেসবুকে বাগুইআটির বাসিন্দা পেশায় কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতায় ওই মহিলা। তারপর ধাপে ধাপে বিশ্বাস অর্জন করে  তাঁকে পুরোপুরি জালে জড়িয়ে ফেলে তারা।

[পাচারকারীদের থেকে উদ্ধার করা কঙ্কাল দেওয়া হল রাজ্যের ৩ হাসপাতালকে]

অভিনব এই প্রতারণার চক্রের শিকার ওই ব্যক্তির নাম ভাস্কর ঘোষ। মার্কিন সংস্থার সঙ্গে ওই বীজের ব্যবসার লোভে প্রতারকদের টোপে পা দেন তিনি। কিন্তু যখন সম্বিত ফেরে ততক্ষণে প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা খুইয়ে ফেলেছেন। অবশেষে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম শাখার দ্বারস্থ হন ভাস্করবাবু। তদন্তে নেমে গত ৪ জুন বেঙ্গালুরুর আর কে পুরম এলাকা থেকে গিনি-বিসাউয়ের বাসিন্দা স্টিভ গোমস, নাইজেরিয়ার বাসিন্দা কাচি আগুগুয়ো, ঘানার বাসিন্দা জনসন উনামউরে এবং সঞ্চিতা দে’কে গ্রেপ্তার করে বিধাননগর পুলিশ। ভাস্করবাবুর থেকে জানা যায়, এপ্রিল মাসে অ্যান এলিজাবেথ নামে এক বিদেশি মহিলার নামে ফেসবুকে একটি ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসে তাঁর কাছে। রিকোয়েস্টটি অ্যাকসেপ্ট করার পরই ভাস্করবাবুর সঙ্গে কথাবার্তা বলতে শুরু করে ওই মহিলা। নিজেকে মার্কিন সেনাবাহিনীর জেনারেল দিয়ে মার্কিন সংস্থার সঙ্গে ব্যবসার প্রস্তাব দেয় সে। ভাস্করবাবু জানিয়েছেন, ফেসবুক চ্যাটে ওই মহিলা জানায়, ভারতের একটি বিশেষ ভেষজ গাছের বীজ দিয়ে মার্কিন মুলুকে জীবনদায়ী ওষুধ তৈরি হয়। সেই বীজ এক মার্কিন সংস্থাকে বিক্রি করে সহজেই ডলারে  প্রচুর অর্থ উপার্জন করা যায়।

Advertisement

[আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে মাদক-মোবাইল পাচার, জালে খোদ পুলিশের ডাক্তার]

উপার্জনের হিসাব দেখে চোখ টাটিয়ে যায় ভাস্করবাবুর। নিমেষেই রাজি হয়ে যান তিনি। এরপরই ওই মহিলা বিনিতা শর্মা নামে বেঙ্গালুরুর এক তরুণীর সঙ্গে  ভাস্করবাবুর পরিচয় করিয়ে দেয়। ভাস্করবাবুকে বলা হয়, বিনিতা ওই বীজের সরবরাহকারী। ওই মহিলার কথামতো বিনিতার থেকে ১৯,৫০০ টাকা দিয়ে এক প্যাকেট বীজ কেনেন ভাস্করবাবু। তাঁকে বলা হয় মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী ওই সংস্থার প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করতে ২৫ এপ্রিল বেঙ্গালুরুতে যেতে। সেখানে গেলে ভাস্করবাবুর থেকে ওই বীজের প্যাকেটটি ১০০ ডলারের বিনিময়ে কিনে নেয় এক বিদেশি। তাঁকে জানানো হয়, ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পর বীজ পাস হলে তবেই বরাত মিলবে। প্রতি প্যাকেটের বাবদ ১২০০ ডলার (৮১ হাজার টাকা) দেওয়া হবে তাঁকে। টাকার অঙ্ক শুনে তাদের কথামতো বিনিতার থেকে আরও ১০০ প্যাকেট কেনেন তিনি। নগদ ১৮ লক্ষ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে। কিন্তু তখনও জানতেন না, ওই মার্কিন সেনাবাহিনীর জেনারেল  অ্যান এলিজাবেথ, বিনিতা এবং ওষুধ প্রস্তুকারক সংস্থার ওই ব্যক্তি সবই সাজানো।

[বাবা ঝাল-মুড়ি বিক্রেতা, উচ্চমাধ্যমিকে অষ্টম হয়ে চমক ছেলে বিশ্বজিতের]

প্রত্যেকেই একই প্রতারণা চক্রের সদস্য। ক্রেতা-বিক্রেতা সেজে ভাস্করবাবুকে ফাঁসিয়ে টাকাটি হাতিয়ে চম্পট দিয়েছে। দিনের পর দিন তাদের ফোন করতে থাকেন ভাস্করবাবু। কিন্তু কোনও জবাব আসেনি। ওই ১০০ প্যাকেট বীজ কিনতেও কেউ আসেনি। শেষমেশ প্রতারিত হয়েছেন বুঝে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান তিনি। গত ৪ জুন বেঙ্গালুরুর আর কে পূরম এলাকা থেকে  গিনি-বিসাউয়ের বাসিন্দা স্টিভ গোমস, নাইজেরিয়ার বাসিন্দা কাচি আগুগুয়ো, ঘানার বাসিন্দা জনসন উনামউরে এবং সঞ্চিতা দে’কে গ্রেপ্তার করে বিধাননগর পুলিশ। তাদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, দু’টি ব্যাঙ্কের পাসবই, এটিএম কার্ড ও পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়। জেরায় পুলিশ জানতে পারে, বছর দু’য়েক আগে জনসনকে বিয়ে করে সঞ্চিতা। তারাই এই চক্রের পান্ডা। স্টিভ ও কাচির মাধ্যমে চক্রের জাল ছড়িয়েছিল তারা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement