ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সিপিএম নয়, সিপিআই-ও নয়, ‘হিন্দু-প্রধান’ ভারত সরকারের আমলে দেশের বামপন্থার হাল জানতে নেতাজির দল ফরওয়ার্ড ব্লককে আমন্ত্রণ জানাল কমিউনিস্ট পার্টি অফ চায়না। কিন্তু কেন এই দলটিকেই আমন্ত্রণ জানানো হল? উঠছে প্রশ্ন।
অভিযোগ, দেশজুড়ে বিজেপি-বিরোধী দলগুলিকে কোণঠাসা করার সবরকম চেষ্টায় বিজেপি। বিজেপিশাসিত এবং বিরোধী রাজ্যগুলিতেও হিংসার বাতাবরণ তৈরির অভিযোগে বিদ্ধ গেরুয়া শিবির। বাংলাতেও গেরুয়া শিবিরের নানা সংগঠন দঁাত বসাতে চাইছে। এমনকী, বহিরাগত অশুভ শক্তির মদতে বাংলাকে অশান্ত করতে বিজেপি কোনও কসুর ছাড়ছে না বলে লাগাতার তাদের শূলে চড়াচ্ছে রাজে্যর শাসক দল তৃণমূল। তৃণমূল তো বটেই, সিপিএমও এই ইস্যুতে প্রতিবাদে নামছে। শক্তি হারালেও আলোচনা-সমালোচনা, বিতর্কে বারবার তারা খবরেই। কিন্তু তাদের ছেড়ে শেষে চিনের কমিউনিস্ট পার্টি ফরওয়ার্ড ব্লককে ডাকল কেন? দলের সাধারণ সম্পাদক জি দেবরাজনের সঙ্গে কলকাতা থেকে শুক্রবার সকালে প্রথমে দিল্লি যাচ্ছেন রাজ্য সম্পাদক তথা জাতীয় সংগঠনের চেয়ারম্যান নরেন চট্টোপাধ্যায়। সেখানকার পার্টি অফিসে চিন সংক্রান্ত প্রস্তুতি সেরে সন্ধ্যায় চিনের বিমান ধরবেন জোড়ায়। জবাবটা সেই প্রস্তুতির ফঁাকেই দিলেন নরেনবাবু।
বাম আমলে দলের প্রাক্তন মন্ত্রী ভক্তিভূষণ মণ্ডলের কথা মনে করিয়ে দিলেন তিনি। তঁার কথায়, “বাম আমলে ভক্তিভূষণ মণ্ডলের হাত ধরেই ভারত-চিন মৈত্রী সমিতি গঠিত হয়। সরকার ও রাজে্যর বাম দলের মধে্য সম্পর্ক যেমনই হোক, ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে সে সময় থেকেই চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সম্পর্ক দলগত স্তরে উন্নীত হয়। আমাদের কনফারেন্সেও তাদের প্রতিনিধি আসেন। তারই ভিত্তিতে এবার সে দেশের বাম দলের আমন্ত্রণ একেবারে ‘পার্টি টু পার্টি’। সেই আমন্ত্রণ রাখতেই আমরা চিন যাচ্ছি।”
১০ দিনের কর্মসূচি রয়েছে বেজিং, সাংহাই, ইউনান-সহ একাধিক প্রদেশে। সে দেশে দল, সরকার, সংগঠন-সংক্রান্ত নানা কনফারেন্স, কৃষি ও গ্রাম উন্নয়ন বিষয়ক আলোচনা-সহ একাধিক সভায় যোগ দেওয়ার কথা ফরওয়ার্ড ব্লকের এই দুই নেতার। এর আগে চারবার চিনে গিয়েছেন নরেনবাবু। শেষবার বাম আমলের শেষ দিকে। এক যুগ পর আবার যাচ্ছেন শুক্রবার। এই সফর সিপিএম নেতৃত্ব জানে? “সে আমরা কী করে বলব?” সটান জবাব নরেনের। তঁার কথায়, “ওদের তো জানানোর কোনও বিষয় নেই। এটা তো ‘পার্টি টু পার্টি’ আমন্ত্রণ। আমরা গেলেই ওরা জানতে পারবে।”
আর বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু? “না, তঁাকেও জানানোর কোনও বিষয় নেই। চিনের কমিউনিস্ট পার্টি ফরওয়ার্ড ব্লককে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সেই সুবাদে আমরা যাচ্ছি। তবে ফিরে এসে বিমানদাকে রিপোর্ট করব”– তঁার সংযোজন। দেবরাজন দক্ষিণের মানুষ। ইংরেজি তো বটেই, হিন্দির পাশাপাশি বেশ ভাল বাংলা জানেন। চিনে গিয়ে সেখানকার কমিউনিস্ট দলের কাজ, সংগঠনের বিষয়ে নেতাদের কথা-বার্তা বুঝতে যাতে দুজনের সমস্যা না হয়, সেজন্য দোভাষীরও ব্যবস্থা থাকছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.