সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শহরের দুর্গাপুজো এবার স্পনসর করবে লালচিন। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে এবার শরিক হতে চলেছে বামপন্থী দেশটি। বাংলার সঙ্গে সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক বন্ধন সুদৃঢ় করতে এমন সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে কলকাতার চিনা দূতাবাস। সল্টলেকের ঐতিহ্যবাহী বি জে ব্লকের পুজোয় এবার একটুকরো চিনকে দেখা যাবে। কলকাতায় চিনা রাষ্ট্রদূত মা ঝানউ বি জে ব্লক পুজোকমিটিকে স্পনসর করার কথা জানিয়েছেন। চিনা দূতাবাসই পুজোর যাবতীয় খরচ বহন করবে বলে জানিয়েছে। পুজোর শহরে সল্টলেকের এই ব্লক সাজবে চিনেপাড়ার আদলে।
ডোকলাম, অরুণাচল নিয়ে যখন ইন্দো-চিন সম্পর্ক কিছুটা বেলাইন হয়েছে, সেখানে এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে উষ্ণতার প্রলেপ দিচ্ছে। কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিতরণ, কমিউনিটি পুজোয় অংশ নেওয়ার কাজ আগেও করেছে চিনা দূতাবাস। কিন্তু এবার এককদম এগিয়ে আস্ত দুর্গাপুজো স্পনসর করার পদক্ষেপ করেছে চিন। শুধু স্পনসর করাই নয়, এমনকী ড্রাগনের দেশে কলকাতার প্রতিনিধি দলও যাবে। সেখানে গিয়ে চৈনিক স্থাপত্যের নিদর্শন ঘুরে এসে সল্টলেকের বি জে ব্লকের মাঠে তারই আদলে পুজোমণ্ডপ গড়বেন শিল্পীরা। শিল্পীরা চিনের ইউনান প্রদেশের কুনমিংয়ে সামনের মাসেই যাবেন। সেখানকার স্থপতিদের সঙ্গে কথা বলে মণ্ডপসজ্জা, প্রতিমার আদল সবই ঠিক করবেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, মণ্ডপ থেকে শুরু করে প্রতিমা, সাজসজ্জা, সবেতেই থাকবে চিনা নিদর্শন। প্যাগোডার আদলে তৈরি হবে মণ্ডপ। মণ্ডপে থাকবে চিনা বাঁশি বাদক, ড্রাগন ডান্স এবং চিনা মার্শাল আর্টিস্টদের প্রদর্শন। এর জন্য চিন থেকেই শিল্পীদের উড়িয়ে আনা হবে।
এবার আসা যাক বি জে ব্লকের পুজোর ইতিহাসে। সল্টলেকের সবচেয়ে পুরনো দুর্গাপুজো হল এই ব্লকের। ১৯৮৩ সালে ব্লকের ১০০টি পরিবার মিলে ২০,০০০ টাকা চাঁদা প্রথম শুরু করে সার্বজনীন পুজো। বর্তমানে ব্লকে রয়েছে ৪১০টি বাড়ি, এবং কমিউনিটি হলের পাশে মাঠে হয় এই পুজো। গতবছর পুজোর বাজেট ছিল ৪০ লক্ষ টাকা। সেইবছরই পুজো দেখতে আসেন চিনা রাষ্ট্রদূত মা ঝানউ। তখনই শহরের পুজোর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। যেমন ভাবা তেমন কাজ। দূতাবাসও বিভিন্ন ভারতীয় উৎসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, কিন্তু দুর্গাপুজোর মতো এমন বড় উৎসবের শরিক হতে পেরে ভালই লাগছে বলে জানিয়েছেন মা। জানিয়েছেন, এবছর সল্টলেকে একটুকরো চিনকে নিয়ে আসবেন। গতবছর তারা পুজো উদ্যোক্তাদের মণ্ডপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে সেফটি অ্যাওয়ার্ড দিয়েছিলেন। বিজয়ীদের চিনেও পাঠিয়েছিলেন পুরস্কারস্বরূপ। এবছর চিনকেই শহরে নিয়ে আসছে পুজোপ্রেমীদের জন্য।
চিনা দূতাবাসের নেকনজরে আসতে পেরে উচ্ছ্বসিত বি জে ব্লক পুজোকমিটির সম্পাদক উমাশংকর ঘোষদস্তিদার। প্রত্যেক বছরই কিছু না কিছু চমক থাকে এই ব্লকের পুজোয়। দূতাবাসের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পর পুরো বিষয়টি সম্পূর্ণ হয়েছে। আগামী সপ্তাহে আরও কিছু বিষয় নিয়ে আলোচন হবে বলে জানিয়েছেন উমাশংকরবাবু। এবছর বাজেট আরও বাড়বে বলে মনে করছেন তিনি এবং আরও এক কর্মকর্তা ভাস্কর সিনহারায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.