স্টাফ রিপোর্টার: ছুটবে রঙের ফোয়ারা। তবু শরীরে লাগবে না এক ফোঁটা রং। অনেকটা আবির ছুঁড়ে মারলে যেমন রঙিন ধোঁয়া তৈরি হয়, এখানে তৈরি হবে সেরকমই রংবেরঙের ধোঁয়া। শুধু প্রয়োজন হবে একটু আগুনের ফুলকির। সামনে দোল, হোলি। আর তার পরই ভোট। শহরের ব্যবসায়ীদের মতে, এবার কলকাতাবাসীর মন মজবে রঙিন ধোঁয়ায়। পোশাকি নাম ‘কালারড স্মোক।’ দোল বা হোলির হাত ধরে তা পৌঁছে যাবে রাজনৈতিক কর্মীদের হাতেও।
জিনিসটি আসলে দেখতে দোদমা অথবা ছোট শেলের মতো। মাথার দিকে থাকে সলতে। আগুন ধরালেই ফুলকি ছড়িয়ে ভিতর থেকে বের হতে শুরু করে রঙের ‘জেট’। চারদিকে ছড়িয়ে যায় রঙিন ধোঁয়া। কিন্তু ধোঁয়া শরীরে লাগে না। সেই সূত্র ধরে ‘কালারড স্মোক’কে এক ধরনের বাজিও বলা যায়। জানা গিয়েছে, এই রঙিন ধোঁয়া মুম্বই ও দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এবার তা গ্রহণ করতে শুরু করেছে শহরবাসীও। বড়বাজারের এক রঙের ব্যবসায়ীর মতে, এই ‘কালারড স্মোক’ শহরে জনপ্রিয় হয়ে উঠতেই পারে। অন্য শহরে এর চাহিদা বেশি। আসলে অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা শরীরে রং মাখতে চান না। অথচ রং দেখতে ভালবাসেন। এই ধরনের রঙিন ধোঁয়া শরীরে লাগলেও তার ছাপ লাগবে না। অথচ চারদিক ভরে যাবে রঙে। দোল বা হোলিতে এই রঙিন ধোঁয়া অনেকের পছন্দ হতে পারে। সামনেই ভোট। আর ভোটের ফল বের হলেই প্রয়োজন হয় আবির বা রঙের। সেই জায়গায় এবার রঙিন ধোঁয়াও পছন্দ করতে পারেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা।
ক্যানিং স্ট্রিটে বহু বছর ধরে বাজির ব্যবসা করছে সুমন কুমারের সংস্থা। তিনি জানান, সাধারণত এই রঙিন ধোঁয়ার বাজি তৈরি হয় তামিলনাড়ুর শিবকাশীতে। সেখান থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই বাজি সরবরাহ করা হয়। সেখান থেকে কলকাতায়ও আসে এই রঙিন ধোঁয়ার বাজি। এক ব্যবসায়ী জানান, এই সময় শিবকাশীর বাজির কারখানা সাধারণত বন্ধ থাকে। তাই পুরনো স্টকই কাজে লাগাতে হচ্ছে। দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা তথা ব্যবসায়ী গোপী ঠক্কর জানান, কলকাতায় ‘কালারড স্মোক’ বিক্রি হতে শুরু করলেও তার ক্রেতা এখনও তুলনামূলকভাবে কম। এই বছর তাঁরা ভবানীপুরে হোলির সময় রঙিন ধোঁয়া ব্যবহার করবেন। হোলিতেও গণেশ প্রতিমার সামনে তাঁরা এই রঙিন ধোঁয়া নিয়ে হোলি খেলবেন। কলকাতায় যদিও রঙিন ধোঁয়া অনেক ব্যবসায়ীই রাখেন না। সেই ক্ষেত্রে তাঁদের ভরসা অনলাইন বিপণি। জানা গিয়েছে, শহরের অনেক বাসিন্দাই ইতিমধ্যে অনলাইন বিপণিতে অর্ডার দিয়েছেন এই রঙিন ধোঁয়ার। বেশ কয়েক প্যাকেট ‘কালারড স্মোক’ তাঁরা জোগাড়ও করে ফেলেছেন। একেকটি বাজির দাম কুড়ি টাকা করে। একেকটি প্যাকেটে থাকে দশটি করে বাজি। তবে এই ধোঁয়া কতটা বিষাক্ত, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জানা গিয়েছে, সাধারণভাবে রঙিন ধোঁয়ার বাজি তৈরি হয় চিনি, পটাশিয়াম নাইট্রেট ও রং দিয়ে। তাই সরাসরি ক্ষতি না করলেও সেই রঙয়ের ধোঁয়ায় শ্বাস না নেওয়াই ভাল বলে পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
ছবি: পিন্টু প্রধান
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.