প্রতীকী ছবি।
অভিরূপ দাস: বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। করে দেখালেন শহরের কলেজ তরুণীরা। ভিনরাজ্যের ক্ষতিকর আবির নয়। বাংলার ফুল দিয়ে নিজেরাই তারা বানালেন আবির। বিক্রিও করলেন কলেজের ছাত্রীদের মধ্যে। আজকের কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে কুসুমিত হল আগামীর উদ্যোগপতি হওয়ার সম্ভাবনা। গতবছর বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, আগামীর দিন ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প-র। অনেক বড় শিল্প যে কর্মসংস্থান করতে পারছে না তাই করছে ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প। সেই পথেই হাঁটল শহরের গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস কলেজ, মুরুলীধর গার্লস কলেজের ছাত্রীরা।
হাতে কলমে আবির বানাতে শিখলেন। দোলের (Holi) আগে বিক্রি করলেন কলেজে এনে। গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ ডা.অতসী কার্ফা জানিয়েছেন, স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে মেয়েদের আবির তৈরির পাঠ দেওয়া হয়েছে। যার মাথায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক অসীম চট্টোপাধ্যায়। জেন জেডের অনেকেই চাইছেন উদ্যোগপতি হতে। ডা. অতসী কার্ফার কথায়, সেক্ষেত্রে মেয়েরা নিজেরা রোজগারের পাশাপাশি অন্যকে স্বনির্ভর করতে পারবে।
এ আবিরে বাঁদুরে রঙ নেই। তা একান্ত বাংলার নিজস্ব ফুল দিয়ে বানানো । স্বনির্ভর হওয়ার পাশাপাশি এবার স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে রং খেলবেন শহরের কলেজের মেয়েরা। অবাঙালি রাজ্যগুলোয় যে আবির দিয়ে রং খেলা হয় তাতে থাকে সীসা ক্যাডমিয়ামের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক। গুঁড়ো আবির শ্বাসনালীর মাধ্যমে ফুসফুসে গেলে মারাত্মক ক্ষতি হয়। কিন্তু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপকের তৈরি আবির সম্পূর্ণ নিরাপদ। এমন আবিরের চাহিদা বাড়ছে দিন কে দিন। গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস কলেজের শিক্ষিকা সেঁজুতি চৌধুরী জানিয়েছেন, ছাত্রীরা শিখেছে। আগামী দিনে তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দিশা দেখাবে।
সম্প্রতি ক্যাটক্যাটে বিহারী গুলাল ছেড়ে বাংলার আবির বানাতে শিখেছেন গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস কলেজ, মুরুলীধর গার্লস কলেজের ৩৯ জন ছাত্রী। শুধু শেখাই নয়। ঠিক হয়েছে আগামীতে এই আবির তারা বাড়িতে তৈরি করে নিয়ে আসবে কলেজে। বিক্রি করবে কলেজে। দাম কত হবে? ম্যানুফ্যাকচারিং কস্ট আলাদা করে দাম তৈরি করার সে ভার ছাত্রীদের ওপরেই দিয়েছেন শিক্ষিকারা। পরিবেশ বান্ধব আয়ুর্বেদিক আবির তৈরির এই কর্মশালার আয়োজন করেছিল মুরুলীধর গার্লস কলেজ আর গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস কলেজের ইনকিউবেশন সেল এবং আইকিউএসি ও মাদার আর্থ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অসীম চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নীল রঙের আবিরের জন্য অপরাজিতা, গোলাপির জন্য গোলাপ আর হলুদের জন্য গাঁদাফুল প্রয়োজন। এই সমস্ত ফুলের দাম যখন কম থাকে তখনই তা কিনে রেফ্রিজেরাটরে রেখে দেওয়া যায়। কিভাবে তৈরি হয় আবির? অসীম চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ফুল গুঁড়ো করে তার সঙ্গে ৩:১ অনুপাতে মেশাতে হবে ট্যালকম পাউডার অ্যারারুট। মিহি উপাদান রোদে শুকোতে হবে। তারপর চেলে নিতে হবে মশারির জালে। মেশাতে হবে সুগন্ধী। গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অতসী কার্ফা এবং মুরুলীধর গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ ডা. কিঞ্জলকিনি বিশ্বাস জানিয়েছেন, কলেজের ছাত্রীদের মধ্যে থেকে উদ্যোগপতি খুঁজে আনার জন্যেই তৈরি করা হয়েছে ইনকিউবেশন সেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.