স্টাফ রিপোর্টার: বাংলায় সাপের বিষের প্রতিষেধক হিসেবে ভিনরাজ্যে তৈরি দাওয়াই তেমন কাজে আসছে না। তাই এবার রাজ্যের সর্পদষ্ট রোগীদের বাঁচাতে বাংলার সাপের বিষ থেকেই উপযুক্ত অ্যান্টিস্নেক ভেনাম (এভিএস) তৈরি হবে। সেই বিষ সংগ্রহের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে ইতিমধ্যে বাছাই করা হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে বলে সোমবার ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘সাপে কাটা চিকিৎসার ইঞ্জেকশন এভিএস-এর অভাব ছিল। এই নিয়ে আমরা পার্লামেন্টে বহুবার সরব হয়েছি। আমাদের আরও গবেষণা করতে হবে।’’ পাশাপাশি এদিন চাষিদের সর্প নিরোধক মোজা দেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
সোমবার ট্রমা কেয়ার সেন্টারের উদ্বোধন ও চিকিৎসকদের সম্মান জানানোর জন্য পিজি হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে বিশিষ্ট সর্পরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ দয়ালবন্ধু মজুমদারকে সম্মানিত করেন৷ ওই সময়ই দয়ালবাবু মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আঞ্চলিক বিষ সংগ্রহ কেন্দ্র নিয়ে প্রস্তাব দেন৷ মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আশ্বস্ত করে জানান, বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার এগোচ্ছে।
গত মার্চে রাজ্যে স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয়কুমার চক্রবর্তী দয়ালবাবুকে বিষ সংগ্রহ কেন্দ্রের উপযোগিতার কথা জানিয়ে মেল করতে বলেছিলেন। তারপর থেকেই শুরু হয় প্রস্তুতি। দয়ালবাবু জানিয়েছেন, আঞ্চলিক বিষ থেকে তৈরি ‘এভিএস’ এখানকার সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসায় অনেক বেশি কার্যকর হবে। এখন তামিলনাড়ুর সাপের বিষ থেকে তৈরি এভিএস এখানকার রোগীদের উপর প্রয়োগ করা হয়। সেগুলি তেমন কাজ করে না। আঞ্চলিক বিষ সংগ্রহ কেন্দ্র হলে এই সমস্যায় রাশ পড়বে। আগে আঞ্চলিকভাবে সংগৃহীত বিষ থেকেই ‘বেঙ্গল কেমিক্যাল’ এভিএস তৈরি করত। কিন্তু, বহুদিন হল তা বন্ধ।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী চাষিদের জন্য সর্প নিরোধক জুতো ও মোজা তৈরির পরিকল্পনার কথা বলেন। তাঁর কথায়, “চাষিরাই বেশি সাপের কামড় খান। বিশেষত বর্ষায় জলে, মাটিতে সাপ মিশে থাকে। চাষিরা জুতো পরে কাজ করতে চান না। মোজা হলে হয়তো পরবেন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দরকার এই বিষয়ে।” মুখ্যমন্ত্রী এদিন নিজের অভিজ্ঞতার কথাও ভাগ করে নেন। বলেন, “আমি তো হাওয়াই চটি পরি। একবার ইলিয়ট পার্কে গিয়ে সাপের মুখোমুখি হয়েছিলাম। আগে আমি হাঁটতে যেতাম। এখন গরম ও বর্ষাকালে যাই না। আমি একদিন গিয়ে দেখি তিনটে সাপ ফণা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। আর একটা জলে সাঁতার দিয়ে পাড়ে উঠেছে। কার্বলিক অ্যাসিড দিয়ে কিচ্ছু হয় না। শহরেই যদি এই অবস্থা হয়, গ্রামের অবস্থা কী?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.