সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আবহে লকডাউনের জেরে গত কয়েক মাস ধরে কাজের গতি শ্লথ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই। প্রশাসনিক কাজকর্মেও একই প্রভাব। আর তা নিয়েই এবার সতর্ক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আজ নবান্নে ভারচুয়াল জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি কড়াভাবে সমস্ত দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের জানিয়ে দিলেন, এতদিন কাজ করা যায়নি ঠিকমতো। তবে এবার মহামারীর অজুহাত দেখিয়ে আর কোনও কাজ ফেলে রাখা যাবে না। বিশেষত জনকল্যাণমূলক কাজের টার্গেট পূরণ করে ফেলতে হবে পুজোর মধ্যে। নাহলে জনগণকে তার অসুবিধা ভোগ করতে হবে।
এদিন ৫ জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠকে করোনা কাজের পর্যালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সমস্ত তথ্য হাতে নিয়ে একে একে জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে জানতে চান, কোন দপ্তরের কাজ কতটা এগিয়েছে। দেখা যায়, কোনও দপ্তরই টার্গেট পূরণ করতে পারেনি। এতে বেশ বিরক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী। রীতিমতো জবাবদিহি চান সকলের কাছে। করোনা, লকডাউনের কথা শুনে স্পষ্ট প্রশ্ন তোলেন, করোনা পরিস্থিতি বলে কি কাজ হবে না?
এ নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতীকে সরাসরি প্রশ্ন করেন, ”কোনও কাজই হচ্ছে না নাকি?” মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পড়েন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। তাঁর কাছেও কাজের কৈফিয়ত চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশিরভাগ কাজে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় বীরভূম ও পুরুলিয়ার জেলাশাসককেও। যদিও তাঁদের উপর ফের আস্থাই দেখিয়েছেন মমতা।
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী কড়াভাবে জানিয়ে দেন, যেসব দপ্তরের কাজের জন্য বরাদ্দ টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেসব কাজ যেন পুজোর আগেই শেষ করা হয়। ১০০দিনের কাজ থেকে রাস্তা সংস্কার, কন্যাশ্রী-রূপশ্রী-সবুজশ্রীর টাকা দেওয়া – কোনও কাজই আর একচুলও বাকি থাকুক, চান না মুখ্যমন্ত্রী। নতুন কলেজ ছাত্রীদের কথা ভেবে তিনি জেলাশাসকদের জানান যে K2 প্রকল্পের টাকাও যেন দ্রুত তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়, নাহলে কলেজে ভরতিতে সমস্যা হতে পারে।
সরকারি কাজে গতি আনতে লাল ফিতের ফাঁস আলগা করে দেওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের মুখ্যমন্ত্রিত্বের এক অন্যতম সদর্থক উদ্যোগ। কর্মঠ নেত্রীর কাছে সবসময়েই প্রাধান্য পেয়েছে কাজ। রাজ্যে কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে এনেছেন তিনি। করোনা আবহেও যে তাতে একচুল ফাঁকিও তিনি বরদাস্ত করবেন না, তা ফের বুঝিয়ে দিলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.